বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেছেন, এক সময় আমরা পাকিস্তানের ২২ পরিবারের বিরুদ্ধে লড়েছি; এখন ২২ হাজার পরিবার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে লুট করছে। এখন বাজারের যে অবস্থা, পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে গেলেও ব্যাগভর্তি বাজার আনতে পারি না। সেখানে আমাদের দেশের কৃষকের কী অবস্থা ভেবে দেখুন। ঢাকার বাজারে বেগুন যদি ৮০ টাকা বিক্রি হয়, যেখানে তারা গ্রামাঞ্চলে বিক্রি করেন ৫–১০ টাকায়। মাঝখানে এক শ্রেণীর মধ্যস্বত্বভোগী তৈরি হয়েছে। এ ধরনের একটা নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা যারা সংস্কৃতিকর্মী আছি প্রগতি সাম্যের কর্মী আছি; তাদের দায়ও অনেকখানি।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাঙামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা উদীচীর নবম সম্মেলনের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এবারের সম্মেলনের স্লোগান ‘পাহাড়ে–সমতলে গেয়ে যাই গান; অধিকারে প্রতিরোধে জেগে ওঠো প্রাণ’। এদিন সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি র্যালি শুরু হয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এসে মিলিত হয়। সেখানে উদ্বোধন শেষে শুরু হয় আলোচনা সভা।
সভায় উদীচীর সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, একটা গণতন্ত্রহীনতার মধ্য দিয়ে আমরা অতিবাহিত করছি। আমরা কথা বলতে পারছি না, কন্ঠরোধ করা হচ্ছে। সাংবাদিক–লেখকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) দিয়ে হয়রানি–কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। তাহলে যে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীন হলাম সেই স্বাধীনতা কি আছে। দেশে কি গণতন্ত্র আছে? আমরা কি ভোট দিতে পারছি? আজকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালাতে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।
সম্মেলনের আলোচনা সভায় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী রাঙামাটি জেলা সংসদের সভাপতি অমলেন্দু হাওলাদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় উদীচীর সহ–সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও উদীচী চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব জহির উদ্দিন বাবর, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সুকুমার বড়ুয়া ও সদস্য সচিব সাগর পাল। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি সমীর কান্তি দে, সহকারী সাধারণ সম্পাদক এম জিসান বখতেয়ার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আশীষ দাশগুপ্ত প্রমুখ। এ সময় উদীচীর বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী এবং ছাত্র–যুব সংগঠকরা অংশগ্রহণ করেন। দুপুরে কাউন্সিল অধিবেশনে অমলেন্দু হাওলাদারকে সভাপতি ও সাগর পালকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন জেলা কমিটির ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় সম্মেলন।