মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জেলা শহর মংডুর আশপাশের কয়েকটি এলাকায় চলছে ব্যাপক সংঘাত। বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবার রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। টানা আট দিন ধরে সেখানে বোমা ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের কারণে রাখাইন রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানি–রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে থমকে রয়েছে সীমান্ত বাণিজ্য। এখনো কাটেনি অচলাবস্থা।
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয় হিমায়িত মাছ, কাঠ, আচার, শুঁটকি, সুপারি, ছোলা ইত্যাদি। রাখাইনের রাজধানী সিথুয়ে টাউনশিপের আশপাশে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে এক মাস ধরে যুদ্ধ করছে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গত কয়েক দিনের লড়াইয়ে সিথুয়ের আশপাশের কয়েকটি জায়গা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে নিয়েছে এবং সিথুয়ে থেকে রাচিডং–বুচিডং হয়ে মংডু শহরে যাতায়াতের প্রধান সড়ক ও নৌপথ বন্ধ করে দিয়েছে আরাকান আর্মি। যার কারণে সিথুয়ের সঙ্গে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসা–বাণিজ্য চার দিন ধরে বন্ধ আছে। এই চার দিনে সিথুয়ে বন্দর থেকে টেকনাফে পণ্যবাহী কোনো কার্গো ট্রলার কিংবা জাহাজ আসেনি।
টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, রাখাইন রাজ্যের চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। গত চার দিন কোনো পণ্যবাহী ট্রলার বন্দরে ভেড়েনি। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মিয়ানমারেও বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বন্ধ আছে। এতে শতাধিক ব্যবসায়ী আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
স্থলবন্দরের শুল্ক বিভাগের কাস্টমস সুপার বি এম আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় সরকার দৈনিক ৩ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, মংডু টাউনশিপের উত্তরে কেয়ারিপ্রাং ও পেরাংপ্রু গ্রামে ৩০ থেকে ৩৫টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, কুলালপাড়া ও ডেইলপাড়াতে কম্পন দেখা দেয়। এ নিয়ে মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
