আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে পুরোদমে উৎপাদনে যাচ্ছে ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ‘খুরুশকুল বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প’। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির আওতায় কঙবাজার সদরের চার ইউনিয়নের উপকূল রেখাজুড়ে ১৯টি টার্বাইন বা পাখা বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী একটি টার্বাইন বসানো হলেই পুরোদমে উৎপাদনে যাবে দেশের বৃহত্তম ও প্রথম বাণিজ্যিক এ বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পটি। এর ফলে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
প্রায় ১১৬.৫১ মিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ‘খুরুশকুল বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটির কাজ ২০২২ সালের ৩১ মার্চ শুরু হয়। একই বছরের ৩১ অক্টোবর প্রকল্পের প্রথম টারবাইন (পাখা) উত্তোলনের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এরপর গত বছরের ২৬ মে ১০টি টার্বাইন বসানোর কাজ সম্পন্ন হলে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলকভাবে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।
চীনা কোম্পানি এসপিআইসি উইলিং পাওয়ার করপোরেশনের আর্থিক সহায়তায় ইউএস–ডিকে গ্রিন এনার্জি বিডি লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের আওতায় কঙবাজার সদরের খুরুশকুল, চৌফলদণ্ডি ও ভারুয়াখালী– এ চার ইউনিয়নের উপকূল রেখাজুড়ে ২২টি টার্বাইন বা পাখা বসানো হচ্ছে। প্রতিটি টার্বাইন থেকে ৩ মেগাওয়াট করে প্রায় ৬৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজ ৯২% ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইউএস–ডিকে গ্রিন এনার্জি বিডি লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুকিত আলম খান। তিনি রোববার রাতে দৈনিক আজাদীকে জানান, প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১৯টি টার্বাইন বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী একটি টার্বাইন বসানো হলেই আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পুরোদমে উৎপাদনে যাবে দেশের প্রথম ও বৃহত্তম এই বাণিজ্যিক বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পটি। আর এই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কঙবাজারের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে। বর্তমানে এ কেন্দ্র থেকে ৩৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় ২২টি টার্বাইন বসানোর কথা থাকলেও কেন্দ্রটি পুরোদমে উৎপাদনে যেতে ২০টি টার্বাইন লাগবে। তাই পরে বাকী ২টি টার্বাইন বসানো হবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, কেন্দ্রটি ১ লাখ পরিবারের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের সময় দেড় হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। এ বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুরোদমে চালু হওয়ার পর বছরে প্রায় ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ কিলোওয়াট পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে একই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয় প্রায় ৪৪ হাজার ৬০০ মে. টন কয়লা। আর এ থেকে কার্বন–ডাই–অঙাইড নিঃসরণ হয় প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার ২০০ মে. টন। এই কেন্দ্রটির কাজ শেষ হওয়ার পর প্রকল্পের তত্ত্বাবধানকারী সংস্থাটি ১৯ বছরের ব্যবস্থাপনা চুক্তির অধীনে সরকারের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করবে।