নাজিরহাটে সড়কের পাশেই ময়লার স্তুপ, চরম বিপাকে পথচারীরা

মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, ফটিকছড়ি | শনিবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ at ১২:১৬ অপরাহ্ণ

নাজিরহাট-কাজিরহাট সড়ক সংলগ্ন স্থানে রাস্তার পাশের জায়গাটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এই রাস্তাটি অফিস, হাসপাতাল ও ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রতিদিন সব শ্রেণির লোকজনের যাতায়তের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এসব ময়লার স্তূপ থেকে বের হওয়া উৎকট দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ায় চরম বিপাকে পড়ছেন পথচারীসহ পৌরবাসী।

নাজিরহাট পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থায়ী স্থান (ডাম্পিং স্টেশন) না থাকায় সড়কের পাশ ঘেঁষেই পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ডের ইসলাম কোম্পানির ইট ভাটা (মন্দাখিনি খালের উত্তর পাশে) সংলগ্ন স্থানে সব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। প্রায় ১১বছর ধরে সড়কের পাশে ময়লা ফেলতে ফেলতে স্থানটি ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। এর দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ময়লা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পুরো এলাকা দূষিত করছে।

সরেজমিনে নাজিরহাট-কাজিরহাট সড়কের নাজিরহাট পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, কেউ নাকে হাত দিয়ে, কেউবা মাস্ক পরে চলাচল করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে দিনের পর দিন পৌরসভা থেকে এসব ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। নাকে কাপড় কিংবা নিশ্বাস বন্ধ না করে এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এছাড়া এখানে সব সময় ময়লায় উৎপন্ন মিথেন গ্যাসের আগুন জ্বলতে থাকে। সেখান থেকে প্রতিনিয়ত যে দুর্গন্ধ ও ধোঁয়া বের হচ্ছে তাতে দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।

স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি পথচারীদের নাকে কাপড় চেপে চলাচল করতে হয়। তাছাড়া কয়েকশ ফুট দূরেই রয়েছে নাজিরহাট কলেজ। ময়লার দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ায় ছাত্র-ছাত্রীসহ আশপাশের অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ আক্কাস ড্রাইভার বলেন, এখানে ময়লা ফেলায় পরিবেশ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। কারও পক্ষে স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিয়ে এ রাস্তা পার হওয়া সম্ভব নয়। আমরা নাক বন্ধ করেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করি। আমরা বার বার অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না।

এ ব্যাপারে ময়লার স্তুপের পাশের বাড়ির মালিক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন- ৩বছর ধরে নাজিরহাট পৌরসভার এসব ময়লা ফেলা হচ্ছে। আমরা ওখানে থাকতে পারছিনা। দূর্গন্ধ, ধোঁয়াতে বিভিন্ন পোকামাকড়, মাছি মশাতে ভরে গেছে। আমি নাজিরহাট পৌরসভা এবং উপজেলায় আবেদনও করেছি। কিন্তু এখনো কোন সমাধান পায়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম বলেন- এসব ময়লা থেকে বায়ুদূষণ হয়। কারন বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ নি:সরিত হয়। যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

এছাড়াও শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উন্মুক্ত ভাবে এভাবে ময়লা না ফেলে গর্ত করে এসব ময়লা পুড়িয়ে দেয়া দরকার।

নাজিরহাট পৌরসভায় মেয়র লায়ন এ. কে জাহেদ চৌধুরী বলেন- ময়লা ফেলার জন্য পৌরসভার নির্দিষ্ট কোন জায়গা (ডাম্পিং স্টেশন) নেই। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার আগে থেকেই ওই স্থানে প্রায় ১১বছর ধরে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এজন্য সরকারি ভাবে কোন বরাদ্দ নেই। আমরা একটা ফান্ডের মাধ্যমে ১০-১২ কিলোমিটার ভিতরে জায়গা নিতে চেষ্টা করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশাহ আমানতে বিমানের সিটের নিচে সাড়ে ৪ কেজি স্বর্ণ
পরবর্তী নিবন্ধকাউকে সন্দেহ করার দিন আজ