রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সব বিমানবন্দরের কর্মচারীদের অপরাধ রুখতে তাদের শরীরে ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। কর্মচারীরা যখন ডিউটিতে যাবেন তখন তাদের বুকে ক্যামেরা বসানো হবে। আপাতত ৮৮৫ জন কর্মচারীর জন্য ক্যামেরা কেনা হচ্ছে। এরই মধ্যে জাপান থেকে ১০০ ক্যামেরা এনেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।
বিভিন্ন সময়ে সোনা ও ডলার পাচার, লাগেজ কাটা, যাত্রী হয়রানি, মানব পাচারে সহায়তাসহ নানা অপরাধের অভিযোগ উঠেছে কর্মীদের বিরুদ্ধে। মূলত এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণেই এমন উদ্যোগ বলে জানা গেছে। খবর বাংলানিউজের।
একটি সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে সিভিল অ্যাভিয়েশন ও বাংলাদেশ বিমানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল সংগ্রহ করা হয়েছে। বিমান ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার অপরাধী কার্যক্রম ঠেকাতে নতুন পরিকল্পনা করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। তারা বেবিচকের অপরাধী সিন্ডিকেটকে ভাঙতে চাচ্ছে।
এজন্য বিমানবন্দরে যারা মানবপাচার ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত তাদের তালিকা করা হয়েছে। তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, এ বিষয়ে সিভিল অ্যাভিয়েশন ও বিমানের ঊর্ধ্বতনরা কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, কর্মচারীরা যখন দায়িত্ব পালন করবেন তখন তাদের অপরাধ রুখতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিমান ও বেবিচকের অসাধু কর্মচারীরা বিমানবন্দরগুলোতে নানা অপরাধে জড়িত। এ কারণেই তারা কিছু কৌশল নিয়েছেন। তাদের জন্য জাপান থেকে ১০০ ক্যামেরা আনা হয়েছে।
ডিউটিরত কর্মচারীদের বুকে এ ক্যামেরা বসানো হবে। দায়িত্ব পালনকালে ক্যামেরা বন্ধ করার সুযোগ থাকবে না। ক্যামেরার মান খুব ভালো। ক্যামেরা চালুর পর কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তাদের কর্মকাণ্ড রেকর্ড হতে থাকবে। বেবিচকও একই ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। বেবিচক ও বিমানের আট শতাধিক কর্মচারীকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নেওয়া হবে। ক্যামেরা বসানোর পর তারা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে সবই দেখা যাবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, সব বিমানবন্দর দুর্নীতিমুক্ত করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কোনো বিমানবন্দরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না। বেবিচক বা বিমানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের কোনো ছাড় নয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর করার চেষ্টা চলছে। যারা অপরাধে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। বেবিচকের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে কিছু কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সন্দেহভাজন কর্মচারীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম বলেন, বিমানের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের অপরাধ রুখতে আমরা চেষ্টা করছি। কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এখন আমরা নতুন কিছু কৌশল হাতে নিয়েছি। বিমানকর্মীরা উিউটিতে গেলে তাদের ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে। ক্যামেরা বন্ধ করা যাবে না। ক্যামেরা দিয়ে তাদের কর্মকাণ্ড মনিটরিং করা হবে।