৬৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ২

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বুধবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি ট্রলার থেকে গত ২৩ এপ্রিল ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনায় ৬৪ জনকে আসামি করে গতকাল কক্সবাজার সদর খানায় একটি মামলা করা হয়েছে এবং মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহত ট্রলার মালিক সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে গতকাল দুপুরে কক্সবাজার সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন বলে জানান পুলিশ সুপার। গতকাল বিকালে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, মামলার এজাহারে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি মাতারবাড়ির এলাকার ট্রলার মালিক বাইট্টা কামাল ও ৪ নম্বর আসামি ট্রলার মাঝি করিম সিকদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এরা এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তিনি জানান, আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

গত ২৩ এপ্রিল কক্সবাজারে বাঁকখালী নদীর মোহনা সংলগ্ন নাজিরারটেক পয়েন্টে একটি ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হয়। ট্রলারটি অন্য একটি মাছ ধরার ট্রলারের জালে আটকা পড়ে। পরে ওই ট্রলারটির জেলেরা ডুবো ট্রলারটিকে রশি দিয়ে টেনে গত ২৩ এপ্রিল দুপুরে শহরের নাজিরারটেকে উপকূলে নিয়ে আসে। এ সময় ট্রলারটিতে লাশ থাকার বিষয়টি দেখতে পেয়ে তারা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলাপাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে সামশুল আলম (২৩), শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে শওকত উল্লাহ (১৮), মুসা আলীর ছেলে ওসমান গনি (১৭), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (২৮), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৫) ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া (২৫)

তবে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জনের লাশ শনাক্ত করেছেন তাদের স্বজনেরা। শনাক্ত ছয়জনের লাশ ময়নাতদন্তের পর সোমবার সন্ধ্যায় হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ বাকি চারটি লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করেছে।

তবে প্রাথমিকভাবে এ ৪ জনকে শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪) বলে স্বজনরা দাবি করেছেন।

হস্তান্তর হওয়া মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝি, চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক, শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামের জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ, চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান, শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামের মুসা আলীর ছেলে গণি ওসমান, একই ইউনিয়নের মোহাম্মদ হোসানের ছেলে নুরুল কবিরের লাশ নামাজে জানাজা শেষে স্ব স্ব এলাকায় দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদোকানে চকলেট নিতে আসা শিশুর পেটে লাগল গুলি
পরবর্তী নিবন্ধপুলিশের হাতে তিন ক্লু