আমরা আমদানি নির্ভরশীলতা কমাতে চাই : এনবিআর চেয়ারম্যান

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারে প্রাক বাজেট আলোচনা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৭ মার্চ, ২০২৩ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, আমরা উন্নত দেশ হতে চাই। আমরা আমদানি নির্ভরশীলতা কমাতে চাই। কাজেই আমদানির শুল্ক কমিয়ে আমদানির সুযোগ বৃদ্ধি করা এখন আমাদের টার্গেট না। যে পণ্য দেশে উৎপাদন হয়সেটার আমদানি আমরা নিরুৎসাহিত করছি। আবার এটি ঢালাওভাবেও করি না। যাতে ভোক্তা গুণগত মান সম্পন্ন পণ্য থেকে বঞ্চিত হয়। সোজা কথায় আমাদের মাথায় রাখতে হবেআমরা ভোগপণ্য আমদানিতে উৎসাহিত করবো না কিছুতেই। সেটি যেন আমাদের দেশেই তৈরি হয়গত এক দশক ধরে উন্নয়নের পথে আছে। জিডিপি বাড়ছে। এসব হয়েছে শিল্পায়নের মাধ্যমে। সরকার ক্ষেত্র তৈরি করেছে। আপনারা সেটির ব্যবহার করছেন। সামনে আরও বিনিয়োগ এবং কর্মস্থান তৈরির লক্ষ্যে কাজ চলছে।

গতকাল নগরীর হোটেল আগ্রাবাদের কর্ণফুলী হলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিএমসিসিআই) আয়োজিত ২০২৩২০২৪ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, আমরা যে প্রতিবছর বাজেটের সময় আপনাদের কাছে আসি, কেন? আমাদের কী বাজেট প্রণয়নের জন্য যথেষ্ট জ্ঞানবুদ্ধি নাই? জ্ঞানবুদ্ধি যথেষ্ট আছে। সেটি যেন আপনাদের সহায়তা করে, আপনাদের যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা না হয়, আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা আসি। কিন্তু এ বাজেট আলোচনায় যখন আপনারা অধিকাংশ সময়ে ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র সমস্যাগুলো নিয়ে আসেন, তখন সেটা বাজেট আলোচনা থাকে না। এমন ঢালাওভাবে নিয়ে আসেন, সেটা আমাদেরকে খুবই বিব্রত করে। আপনাদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, প্রমাণযোগ্য ডকুমেন্টসহ আমাদের কাছে অভিযোগ আনেন। তারপর দেখেন, অ্যাকশন নিই কি নিই না। আপনাদের যে কোনো সমস্যা নিয়ে আপনারা এসিস্টেট্যান্ট কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, জয়েন্ট কমিশনারের কাছে যাবেন। সেখানে যদি কিছু না হয় সরাসরি কমিশনারের কাছে যাবেন। যদি আপনারা সঙ্গত বিষয় নিয়ে কথা বলতে যান, তাহলে উনারা অবশ্যই পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখবেন এবং আপনাদের সহযোগিতা করবেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়আপনি নিজেই অতিরিক্ত সুবিধা চাচ্ছেন। কিন্তু পাচ্ছেন না বলে মনে করছেনআপনাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারিআমার অফিসাররা এখন ব্যবসায়ীদের হয়রানি করার কাজে লিপ্ত নেই।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সিএমসিসিআইয়ের সভাপতি খলিলুর রহমান লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় তিনি আমদানিকৃত উপকরণের ক্ষেত্রে অগ্রিম কর শূন্য হারে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ২ (দুই) শতাংশ হারে পুনঃনির্ধারণ, প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপো খাতের কর হার ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ হারে হ্রাস করা, বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের খাত রেডিমেড গার্মেন্টসের আয়ের উপর উৎসে কর হার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৩০ শতাংশ ধার্য করা, কোম্পানির কর নির্ধারণ অডিট রিপোর্টকে তথ্যের চূড়ান্ত এবং মূল উৎস হিসেবে বিবেচনা করা, অনুমান নির্ভর কর ধার্য বন্ধ করা এবং প্রাইভেট আইসিডির ক্ষেত্রে ভারী সরঞ্জাম বা মেটেরিয়াল হ্যান্ডেলিং ডিভাইস ইত্যাদি সামগ্রী আমদানি শুল্কের হার হ্রাস করণের প্রস্তাব করেন। এরপর সিএমসিসিআই সহসভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী, সদস্য জামাল উদ্দীন আহমেদ, মারুফ পাটোয়ারী, তৌফিকুল ইসলাম ও মনছুর উদ্দীন আহমেদ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে বক্তব্য রাখেন এনবিআর সদস্য (কাস্টমস নীতি) মো. মাসুদ সাদিক, সদস্য (আয়কর নীতি) . সামস উদ্দিন আহমেদ এবং সদস্য (মূসক নীতি) মিজ জাকিয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানে সিএমসিসিআই’র পরিচালক প্রফেসর জাহাঙ্গীর চৌধুরী, হাজী এম এ মালেক, মো. শফি, এম সোলায়মান, অজিত কুমার দাশ, জিরি সুবেদার গ্রুপের এমডি ওয়াহিদ ফেরদৌস উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘অন্যায্য’ গৃহকর বন্ধে ৪১ ওয়ার্ডে সংগ্রাম কমিটি গঠনের ঘোষণা
পরবর্তী নিবন্ধরোজায় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে কাজ করবে চসিক