চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পরিষ্কার রাখতে জনসচেতনতার পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সচল রাখার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ও সিডিএকে সমন্বিতভাবে কাজ করার সুপারিশ করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে গতকাল মঙ্গলবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় এ সুপারিশ করা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জলাবদ্ধতা নিরসনে অনেক অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলেও সুফল আসছে না। খালগুলো খনন করার পর এগুলো নিয়মিত দেখভাল করতে হবে।
সভায় অংশ নেন কমিটির সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ, বজলুল হক হারুন, মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন ও ফরিদা খানম। বিশেষ আমন্ত্রণে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ সভায় যোগ দেন। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিটি মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের বাইরে থাকা ২১টা খালের জন্য প্রকল্প নেবে সিটি কর্পোরেশন। তিনি সিডিএর রিভাইজড প্রকল্পে সিল্ট ট্র্যাপ ও গার্ভেজ ট্র্যাপ বসিয়ে আবর্জনা যাতে নদীতে না পড়ে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব দেন। সভায় তিনি বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, আগামী বর্ষার আগে রিটেইনিং ওয়ালের কাজ শেষ না হলেও চাক্তাইসহ গুরুত্বপূর্ণ খাল থেকে থেকে মাটি উত্তোলন করে পানি চলাচলে প্রবাহ বৃদ্ধির পথ করে দেওয়া। মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সভায় মেগা প্রকল্পের কাজ যতটুকু হয়েছে ওটা বুঝে নিতে সিটি কর্পোরেশনকে অনুরোধ করেন গণপূর্ত সচিব। কিন্তু সিটি মেয়র পুরো কাজ শেষ না হলে প্রকল্প বুঝে নিতে অপারগতা জানান।
ইঞ্জিনিয়ার মোশররফ হোসেন বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন না হলে জলাবদ্ধতা কখনো কমবে না। তিনি রিভাইজড বাজেট বা চট্টগ্রামের বাকি খালগুলোর জন্য প্রকল্প লাগলেও যাতে চট্টগ্রামবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পায় সে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
সভায় পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত সুরক্ষায় হোটেলগুলোর বর্জ্য ও হ্যাচারিগুলোর দূষিত পানি পরিশোধনের জন্য স্থায়ী এসটিপি করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের করার সুপারিশ করা হয়। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের দখল হওয়া জমিগুলো উদ্ধার করে নিজস্ব অর্থায়নে বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে।
সভায় গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর, স্থাপত্য অধিদপ্তর, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চলমান প্রকল্পের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং আবাসন পরিদপ্তরের সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করা হয়।