আলোচনা গান কবিতায় চার গুণীকে স্মরণ

আনিসুজ্জামান মুর্তজা বশীর ভূঁইয়া ইকবাল ও শামসুল হোসাইন

| বুধবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

করোনাকালে প্রয়াত দেশের চার গুণীজনকে স্মরণ করেছেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট নাগরিকেরা। গুণীজনদের লেখা থেকে পাঠ ও স্মৃতিচারণ, সমবেত সঙ্গীত, কবিতার মধ্য দিয়ে তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রয়াত গুণীজনদের মধ্যে রয়েছেন- জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, আধুনিক চিত্রকলার মান্য শিল্পী মুর্তজা বশীর, গবেষক ও সাহিত্যিক ড. ভূঁইয়া ইকবাল, চট্টল গবেষক ড. শামসুল হোসাইন।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নাগরিক স্মরণসভা কমিটি, চট্টগ্রাম আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। তিনি চার গুণীজনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, আজ আমরা দেশবরেণ্য যেসব গুণীজনদের স্মরণ করছি, তাঁরা একটি জাতির ক্রমবিকাশ ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে অবদান রেখে গেছেন। জাতির দায়িত্ব তাঁদের যথাযথভাবে স্মরণ করা। করোনার দুঃসময়ে আমরা অনেক স্বজন-প্রিয়জনকে হারিয়েছি। যারা সমাজ-রাষ্ট্রকে এগিয়ে রাখতে তাদের জীবনের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে গেছেন, মহামারী করোনা তাঁদের আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে।
সভায় শামসুল হোসাইনের স্মৃতিচারণ করে কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, তিনি (শামসুল হোসাইন) একটি জাদুঘর গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে ছাত্রজীবন শেষ হওয়ার পর থেকে ধাপে ধাপে একজন প্রত্নসম্পদ সংগ্রাহক, সংরক্ষক এসবের প্রদর্শক ও প্রচারক হয়ে উঠেছিলেন। ড. ভূঁইয়া ইকবালের স্মৃতিচারণ করে ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হক বলেন, ভূঁইয়া ইকবাল ছিলেন একজন মনেপ্রাণে গবেষক। তিনি কেবল একজন শিক্ষাবিদ বা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক ছিলেন না। তাঁর সংকলিত ও সম্পাদিত গ্রন্থে সমকালীন বাঙালি মুসলমান সমপ্রদায়, সমকালীন সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক, ভারতবর্ষের স্বাধীনতা ও শিক্ষা ব্যবস্থা, সাহিত্যে সামপ্রদায়িকতা, বাংলা ভাষায় আরবি-ফারসি ও উপভাষায় ব্যবহার ইত্যাদি সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও মনোভাবের স্পষ্ট প্রতিফলন হয়েছে। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের স্মৃতিচারণ করে অধ্যাপক গোলাম মুস্তফা বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান কৈশোরে ছবি বিশ্বাসের অভিনয় দেখে তাঁর ইচ্ছা হয়েছিল আইনজীবী হওয়ার। কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত হলেন শিক্ষক। শিক্ষকতায় আনিসুজ্জামানের অঙ্গীকার কতটা দৃঢ় ছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায় একটি ঘটনায়। তাঁর জীবনের আদর্শ, সংগ্রাম ও স্বপ্ন ছিল একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশের। উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শীলা দাশগুপ্ত ও আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, ড. ভূঁইয়া ইকবালের বড় ছেলে অনিন্দ্য ইকবাল, শিল্পী মুর্তজা বশীরের ছোট মেয়ে মুনিজা বশীর এবং নাগরিক শোকসভার সমন্বয়কারী ও জেলা উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চন্দন দাশ। উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদ ও রক্তকরবীর শিল্পীদের সমবেত সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। গুণীজনদের স্মৃতিচারণ করে নাগরিক শোকসভা কমিটির প্রকাশিত পুস্তিকা থেকে পাঠ করে শোনান নাট্যজন শুভ্রা বিশ্বাস, আবৃত্তিশিল্পী প্রণব চৌধুরী, মিলি চৌধুরী ও সেলিম রেজা সাগর। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্টেশন রোডের পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৯ হাজার টাকা জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধমমতার সহায়তায় নতুন ঘর পেল রাবেয়া বছরি