বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমাদানিকারক দেশ চীনের চাহিদা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সৌদি অ্যারামকো তেলের উৎপাদন বাড়াতে প্রস্তুত থাকার ঘোষণা দেয়ার পরই বাজার কমতে শুরু করে।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইরানের ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনর্বহাল হলে বাজারে জ্বালানি তেলের প্রবাহ বাড়বে। যা জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাজারে নতুন করে প্রভাব ফেলতে শুরু করবে বলেও সূত্রগুলো মন্তব্য করেছে। সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম প্রতি ব্যারেল ৯৭.১ ডলার। আগের দিন যা ছিল ৯৮.১৫ ডলার।
একদিনের ব্যবধানে ব্যারেল প্রতি ১ দশমিক ১৪ ডলার বা ১ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে তেলের দাম। এর আগে গত শুক্রবারও ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ১ দশমিক ২০ ডলারের মতো কমেছিল। অন্যদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেঙাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দর প্রতি ব্যারেলে গতকাল ছিল ৯১ দশমিক ০৩ ডলার। ওয়েস্ট টেঙাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম ১ দশমিক ০৬ ডলার বা ১ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। গত শুক্রবার ওয়েস্ট টেঙাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছিল। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চীনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার হঠাৎ করে কমে গেছে।
গত জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে চীনের অর্থনীতি বেশ থমকে গেছে। এতে জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমেছে। চীনের দৈনিক পরিশোধিত তেল উৎপাদন কমে হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর চীনের অর্থনীতির গতি ও পরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন এতটা কমেনি। জ্বালানি তেল ব্যবহার কমে যাওয়ার চীন সরকারের প্রকাশিত হিসাবটি প্রকাশের পাশাপাশি বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সৌদি অ্যারামকো উৎপাদন বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত এই তেল কোম্পানিটি প্রতিদিন সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা ১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানায়। একদিকে বাজারে তেলের যোগান বৃদ্ধি এবং অন্যদিকে ব্যবহার হৃাসের খবর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রভাব ফেলে। এরই জের ধরে গতকাল জ্বালানি তেলের দাম আরও কমে।
অপরদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রস্তাবনা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান যদি ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনর্বহাল করে, তাহলে বাজারে আরও তেল আসবে। তখন জ্বালানি তেলের দাম আরো কমে আসবে বলেও সূত্র আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
