২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর একগুচ্ছ তরুণ-তরুণির প্রচেষ্টায় যাত্রা শুরু করে বৈখরী আবৃত্তি আলয়। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ঐশী পাল, যিনি বিশ্বাস করেন আন্তরিক সহযোগিতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভরসা সবসময় স্বপ্ন বুনতে সাহায্য করে।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আবৃত্তি সংগঠন হিসেবে বৈখরী আবৃত্তি আলয়ের পথচলা দুই বছর। সাংগঠনিক আবৃত্তি চর্চার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বন্ধু সংগঠনগুলোর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নিয়মিত কাজ করে চলেছে বৈখরী। যাত্রা শুরুর পরপরই দেশে করোনা মহামারি চলে আসায় আবৃত্তি চর্চা কিছুটা সীমিত ছিলো। ঘরবন্দী সময়েও বৈখরী শোকাবহ আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে জাতির পিতা শিরোনামে অনলাইনে আবৃত্তি আয়োজন করে।
এতে চট্টগ্রাম সহ সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জনপ্রিয় সংবাদপাঠক ফারজানা করিম, আবৃত্তি শিল্পী অঞ্চল চৌধুরী, নাজমুল আহসান, সুকান্ত গুপ্ত, কবি ভাগ্যধন বড়ুয়া, জিন্নাহ্ চৌধুরীসহ অনেকে অংশ নেন। বৈখরীর যাত্রা শুরুর অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন কথাসাহিত্যিক হরিশংকর জলদাস।
২০২০ সালে ১ মার্চ বৈখরী স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে আয়োজন করে মুক্তির সোপান। আয়োজনে অতিথি ছিলেন অধ্যাপক আবদুল আলীম, উপ শুল্ক কর্মকর্তা সুশান্ত পাল। ২০২২ সালের ২ মার্চে স্বাধীনতা মাসকে কেন্দ্র করে মুক্তির সোপান অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনে ঢাকা থেকে আমন্ত্রিত আবৃত্তি শিল্পী হিসেবে মাশকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আবু নাসের মানিক, মাসুম আজিজুল বাসার অংশ নেন। এছাড়াও চট্টগ্রামের কবি ও আবৃত্তিশিল্পীদের অংশগ্রহণ আয়োজনকে প্রাণবন্ত করে।
বৈখরী শব্দের আভিধানিক অর্থ স্বর যেখানে বাসা বাঁধে। শ্বাস যুক্ত হয়ে উচ্চারিত শব্দই বৈখরী। প্রাণবায়ু, কন্ঠ, তালু, জিহবা ইত্যাদির অভিঘাতে উৎপন্ন হয়ে এই শব্দ ছড়িয়ে পড়ে বলেই তা বৈখরী বা নাদ। বৈখরী আবৃত্তি আলয় পৃথিবীর ছোট্ট এক কোণে দরজা জানালা বিহীন বিশ্বাসের আস্তরণে গড়ে ওঠা একটি আবৃত্তি পরিবার। একটি আলয়ে তারা গুটিকয়েক সদস্য মিলে আবৃত্তি চর্চা করে। সেই ধারা থেকেই এই নামকরণ। কবিতা পাঠ, বিশ্লেষণ এবং এর গভীরতা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ায় বৈখরীর লক্ষ্য। অনেক জোয়ার ভাটা অতিক্রম করে বৈখরী এগিয়ে চলার প্রত্যাশা রাখে। বন্ধু সংগঠন এবং অনেকেই সবসময় বৈখরীর পাশে থেকেছে। বৈখরী এভাবেই সবসময় সবাইকে পাশে চায়। ইতিমধ্যে বৈখরী দুইটা প্রযোজনা করেছে কালপুরুষের আলো এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলাদেশ।
এছাড়াও বন্ধু সংগঠনের আয়োজনে সবসময় অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে পহেলা বৈশাখে সমবেত আবৃত্তিতে অংশ নেয়। সম্মিলিত আবৃত্তি জোটের আবৃত্তি উৎসবে অংশ নেয়। নিয়মিত ঘরোয়া বৈঠকের মাধ্যমে বৈখরী সদস্যদের আবৃত্তি চর্চা অব্যাহত আছে। প্রতিষ্ঠাতা ঐশী পাল জানান, ক্ষুদ্র মনে স্বপ্ন অনেক। বাস্তবায়ন সম্ভব হবে সকলের আন্তরিক সহায়তায়। তাই সকলের আন্তরিক সহায়তা সবসময় প্রয়োজন।