পশ্চিমা দেশগুলোর পাঠানো অস্ত্রের চালান নিয়ে ইউক্রেনে নামার আগেই একটি সামরিক বিমান গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করছে রাশিয়া। বন্দরনগরী ওডেসার কাছে ইউক্রেনের ওই বিমানটি রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটের হামলার মুখে পড়ে বলে শনিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগর কনাশেনকভকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিওপোলে যুদ্ধ করা ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। এমনকি আত্মসমর্পণ করা যোদ্ধাদের জীবন রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে দেশটি। গতকাল রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানায়। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রোববারের মধ্যেই মারিওপোলের ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। যদি সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে ইউক্রেনীয় সেনারা আত্মসমর্পণ করে, তবে তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে মস্কো। মস্কোর এ দাবি সত্য কিনা, তা যাচাই করতে পারেনি বিবিসি। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছে কিনা, তাও পরিষ্কার হওয়া যায়নি। শনিবার জেনারেল কনাশেনকভ ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনী ও এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় রাশিয়ার বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথাও জানিয়েছেন। রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট লজোভায়া ও ভেসেলায়ার ওপর দুটি ড্রোনও ভূপাতিত করেছে, বলেছেন তিনি। এর আগে রাশিয়া মারিওপোলের দখল নেওয়ার কথা জানালেও শহরের আঝোভাস্তাল স্টিলওয়ার্কস এলাকায় কিছুটা জায়গা ইউক্রেনীয় সেনাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রতি আধঘণ্টা অন্তর সেখানে আত্মসমর্পণের আহ্বান প্রচার করা হচ্ছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রাশিয়া। একই সঙ্গে আত্মসমর্পণের জন্য ইউক্রেনীয় সেনাদের কিয়েভের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়েছে দেশটি।
অপরদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, মারিওপোল শহর দখলে নেওয়ার বিষয়টি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি তারা। তবে আসলেই শহরটি মস্কোর দখলে চলে গেলে তা হবে রুশ সেনাদের হাতে পতন হওয়া ইউক্রেনের প্রথম বড় কোনো শহর। প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ সেনারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৫ জন ইউক্রেনীয় নাগরিক দেশ ছেড়েছে।