কর্ণফুলী নদীর সাম্পান মাঝিদের ধর্মঘট চলছে। গতকাল দ্বিতীয় দিন পার হলেও সংকটের কোনো সুরাহা হয়নি। আজ (মঙ্গলবার) সাম্পান মাঝিরা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কার্যালয় ঘেরাও করবেন। ধর্মঘটের কারণে মাঝিরা কর্ণফুলী নদীর পুরাতন ব্রিজঘাট হতে যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে নদীর ওপার থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে সাম্পানে করে শহরে আসা কয়েক হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বিশেষ করে পোশাক শিল্পের শ্রমিক, সবজি চাষি ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সাম্পান ধর্মঘটের কারণে চরম বেকায়দায় পড়েছেন। এদের অনেকেই কাজে যোগ দিতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ বহু অর্থ এবং সময় ব্যয় করে ঘুরপথে শহরে আসা যাওয়া করছে।
গতকাল সাম্পান মাঝিরা জানিয়েছেন, কর্ণফুলী নদী পারাপারে এই নৌপথে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার মানুষ গ্রাম থেকে শহরে আসা যাওয়া করেন। এরা নানা কাজে শহরে আসে এবং কাজ শেষে আবারো গ্রামে ফিরে যান। এদের পারাপারের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে সাম্পান। এই সাম্পানে যাত্রী পারাপারের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ঘাট ইজারা দিয়ে থাকে। কিন্তু এবার ঘাট ইজারা দেয়া হয়নি। স্থানীয় কিছু লোকজন দিয়ে জনপ্রতি ৫ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। বিষয়টি যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে সাম্পান মাঝিদের মাঝেও। তারা বিষয়টি লিখিতভাবে সিটি মেয়রকে জানালেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এই অবস্থায় সাম্পান মাঝিরা গত দুইদিন ধরে ধর্মঘট করছেন। আজ তারা সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও করবেন।
কর্ণফুলী নদী সাম্পান কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা আলীউর রহমান গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেছেন, ঘাট নিয়ে একটি অরাজকতা চলছে। এটির স্থায়ী সুরাহা দরকার। আজ আমরা সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও করবো। আমরা আমাদের দুঃখের কথা সিটি মেয়রকে জানাবো। তিনি দ্বিতীয়
দিনের মতো স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট পালিত হয়েছে বলেও জানান। মাঝিদের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। আলীউর রহমান বলেন, ধর্মঘটের ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। মাঝিদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা বিষয়টি সদয় বিবেচনার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ করছি।