কাস্টমসে ই-পেমেন্ট ভোগান্তি পণ্য খালাস ব্যাহত

সকালে শুল্ক পরিশোধের কনফার্মেশন বিকেলেও পান না ব্যবসায়ীরা প্রশ্নের মুখে এনবিআরের পেপারলেস ট্রেড সিস্টেম

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে অনলাইন মাধ্যমে (ই-পেমেন্ট) শুল্ক কর পরিশোধে ভোগান্তির অভিযোগ উঠেছে। আমদানি-রপ্তানিকারকদের ইউজার আইডি দিয়ে আরটিজিএস (রিয়েলটাইম গ্রস সেটেলমেন্ট) গেটওয়ের মাধ্যমে শুল্ক পরিশোধে ভোগান্তির ফলে পুরো সিস্টেম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেক ব্যবসায়ী সকালে ই-পেমেন্ট করে বিকেল গড়িয়ে গেলেও শুল্ক আদায়ের কোনো কনফার্মেশন পাননি। তবে কাস্টমস কর্তারা বলছেন, ই-পেমেন্টের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সার্ভারের সাথে ব্যাংকের সার্ভার সংযুক্ত থাকে। কোনো একটি সার্ভারে ত্রুটি দেখা দিলে সমস্যা হতে পারে। বিষয়টি পুরোপুরি টেকনিক্যাল।
জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা আনতে এনবিআর চলতি বছরের পহেলা জুলাই থেকে ই-পেমেন্ট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে। দুই লাখ টাকার বেশি শুল্ক-কর, ফি, চার্জ এই মাধ্যমে আদায় করতে দেশের সবগুলো কাস্টম হাউসকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কাস্টম হাউসগুলোও সেভাবে শুল্ক-কর আদায় শুরু করে। এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি কাস্টমসের ওয়েবসাইটে দৃশ্যমান রয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নির্দেশনা মোতাবেক বাণিজ্য সহজীকরণের অংশ হিসাবে এনবিআর গত ২০১৭ সাল থেকে ই-পেমেন্ট সিস্টেম চালু করে। এ পদ্ধতিতে আমদানিকারক বা তার মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি ট্রেজারিতে শুল্ক-করের অর্থ পরিশোধ করতে পারেন। আগে পদ্ধতিটি বাধ্যতামূলক না করার ফলে আশানুরূপ সুফল পাওয়া যায়নি।
ই-পেমেন্টে ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে হয়তো এখন ৫ থেকে ১০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ ই-পেমেন্টে হচ্ছে। তবে এখানে কথা হলো-১ শতাংশও কেন ভোগান্তিতে পড়বে। দেখা যায়, সকাল ১০টায় ই-পেমেন্ট করা হলো কিন্তু বিকেলেও সেটি পরিশোধ দেখাচ্ছে না। তাহলে তো পে অর্ডারে শুল্ক পরিশোধই ভালো ছিল। এভাবে প্রতিদিন ৩-৪টা ই-পেমেন্টে ঝামেলা হতো। কিছুদিন আগে আমার ৪টা পেমেন্ট আটকে ছিল। অথচ আরটিজিএস সিস্টেমে সেকেন্ডেই পেমেন্ট হয়ে যাওয়ার কথা। আজকে (গতকাল) আমার জানা মতে-৩০টার মতো পেমেন্টে সমস্যা হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের একটি শিল্পগ্রুপের ১৪টা পেমেন্ট আটকে যায়। এভাবে ভোগান্তি হলে এনবিআরের পেপারলেস ট্রেড সিস্টেম করার যে উদ্যোগ সেটিই মুখ থুবড়ে পড়বে। এনবিআরকে তাই পুরো সিস্টেমটাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার দিকে নজর দিতে হবে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সিস্টেম এনালিস্ট আহসান হাবীব সুমন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ই-পেমেন্টে কিছু কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী নয়। হয়তো একসাথে অনেকে পেমেন্ট করছেন তখন সার্ভারে জট লাগতে পারে। তবে নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না, এটা কি ব্যাংকের সার্ভারের সমস্যা নাকি এনবিআরের সার্ভারের সমস্যা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাম্পান মাঝিদের ধর্মঘট চলছে দ্বিতীয় দিনেও হয়নি সুরাহা
পরবর্তী নিবন্ধবিদেশ থেকে অপপ্রচারে ওই দেশের আইনে ব্যবস্থা : তথ্যমন্ত্রী