চট্টগ্রাম কাস্টমসে ১০ জাপানি গাড়িসহ ৯৩ লট পণ্য নিলামে তোলা হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার। নিলাম শাখার কর্মকর্তারা জানান, নিলাম প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্যাটালগ ও দরপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন বিডাররা।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, নিলামের তালিকায় থাকা জাপানি গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে সিলভার কালারের টয়োটা ব্র্যান্ডের প্রভোক্স গাড়ি। নিলামে এর সংরক্ষিত দাম ধরা হয়েছে-১৮ লাখ ৬৪ হাজার ৮২৯ টাকা ৪৩ পয়সা। এর আগেও গাড়িটি চারবার নিলামে তোলা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে নিশান ব্র্যান্ডের সাদা কালারের গাড়ি। যেটি গত বছরই চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসে আমদানিকারক। এর মূল্য ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ ৯৪ হাজার ৬৮০ টাকা ৭৩ পয়সা। টয়োটা ব্র্যান্ডের সাদা কালারের অপর গাড়ির দাম ধরা হয়েছে ১১ লাখ ২৬ হাজার ১১৫ টাকা ৭০ পয়সা। টয়োটা ব্র্যান্ডের সিলভার কালারের গাড়ির দাম ধরা হয়েছে ২০ লাখ ৩০ হাজার ৬৯ টাকা ১০ পয়সা। টয়োটা ব্র্যান্ডের কালো রংয়ের গাড়ির দাম ধরা হয়েছে ২৬ লাখ ৮৯ হাজার ৩৯৯ টাকা। টয়োটা ব্র্যান্ডের নেভি কালারের মাইক্রোবাসের গাড়ির দাম ধরা হয়েছে ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭৬২ টাকা ৭১ পয়সা। টয়োটা ব্র্যান্ডের নোহা গাড়ির দাম ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ ৩৩ হাজার ৫২৩ টাকা ৬২ পয়সা, টয়োটা ব্র্যান্ডের পিক আপের দাম ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৩৩ টাকা। নিশান ব্র্যান্ডের মাইক্রোবাসের দাম ধরা হয়েছে ২১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৬ টাকা ৫৩ পয়সা। টয়োটা ব্র্যান্ডের অপর গাড়ির দাম ধরা হয়েছে ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৬ টাকা ৯৪ পয়সা।
গাড়ি ছাড়াও নিলামের তালিকায় রয়েছে-সালফিউরিক এসিড, টেঙটাইল কেমিক্যাল, এমপিইটি ফিল্ম, ড্রাগন ফল, গার্মেন্টস ফেব্রিঙ, ফুটওয়্যার, টাইলস, হ্যাঙ্গার, থান কাপড় বা কাটা কাপড়, জিংক অঙাইড, সুইচ সকেট, স্টিল ট্যাংক ফ্রেম, জেন্টস আন্ডারওয়্যার, পেপার ট্যাগ, কাটিং ব্লেড, প্লাস্টিক বাকল, আর্টিফিশিয়াল লেদার বেল্ট, রাইচ মিলের যন্ত্রাংশ, গজ রিবন, চাল কলের যন্ত্রপাতি, হ্যান্ড গ্লোভ, মিনারেল ওয়াটার, রাসায়নিক পদার্থ, টিউব লাইট, ফ্লাড লাইট, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ, ল্যাবরেটরি পণ্য, হোস পাইপ, ফ্লোর ম্যাট, বেবি ডায়াপার, গাড়ি ও প্রিন্টার অ্যাকসোসরিজ, বাদাম, ক্লিয়ার শিট গ্লাস, হুইল চেয়ার ও মেডিকেল পণ্য, সিকিউরিটি ট্যাগ ও প্লাস্টিক বোতল।
নিলাম শাখার কর্মকর্তারা জানান, বিডাররা অফিস চলাকালীন সময়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা এবং নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কে এম কর্পোরেশনের মাঝিরঘাটের অফিস থেকে ক্যাটালগ ও দরপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়া ঢাকার কাকরাইলে অবস্থিত শুল্ক আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেটের যুগ্ম-কমিশনারের (সদর) কার্যালয় থেকেও মূল্য পরিশোধ করে ক্যাটালগ ও দরপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। নিলামের দরপত্র ১৬ সেপ্টেম্বর বেলা ২টার মধ্যে জমা দেয়া যাবে চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তার (প্রশাসন) কার্যালয়ে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ও ঢাকার কাকরাইলে অবস্থিত শুল্ক আবগরী ও ভ্যাট কমিশনারেটের যুগ্ম-কমিশনারের (সদর) কার্যালয়ে। একইদিন বেলা আড়াইটায় বিডারদের উপস্থিতিতে দরপত্রের বাঙ খোলা হবে। নিলাম সম্পন্ন হওয়ার পর সর্বোচ্চ দরদাতার অনূকুলে পণ্য বিক্রির অনুমোদন দিবেন নিলাম কমিটির সদস্যরা। নিলামে অংশগ্রহণ করতে প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দরপত্রের সাথে হালনাগাদ করা ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সনদ, টিআইএন সার্টিফিকেটের কপি দাখিল করতে হবে। ব্যক্তির ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি এবং হালনাগাদ টিআইএন সার্টিফিকেটের কপি দাখিল করতে হবে। এছাড়া ক্যাটালগে উল্লেখিত শর্ত পূরণ করে নিলামে অংশ নেয়া যাবে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার মো. আল আমিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, নিলাম আমাদের রুটিন কার্যক্রমের একটি অংশ। এবারের নিলামে ১০টি জাপানি গাড়ি তোলা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেওয়ায় বন্দরে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো চার্জ পায় না।