আনোয়ারায় কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (কেইপিজেড) ১০০ একর জমিতে হাইটেক পার্ক উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে ভার্চুয়ালি এই পার্কের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেইপিজেডের হাইটেক পার্কের পণ্য ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ নামে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। এটি হবে বিশ্ববাসীর ব্র্যান্ড, যা বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে আনবে।
পলক বলেন, স্থানীয় মানব সম্পদের উপর আস্থা রেখে মহামারীতেও দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। গত বছরের ইতিবাচক বাজার প্রবৃদ্ধিতে আশিয়ানের দুটি দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা কৃষিপণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, অবকাঠামো ও বিনিয়োগ সুবিধার কারণে এখন দেশে দুই শতাধিক কোরিয়ান কোম্পানি রয়েছে। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে কোরিয়ার অবস্থান বাংলাদেশে ষষ্ঠ। আমি বিশ্বাস করি, কেইপিজেডে বিনিয়োগ ডিজিটাল প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা তৈরিসহ অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।
কেইপিজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-গুন, স্পার্ক ল্যাব কো-ফাউন্ডার জিমি কিম, হাইটেকপার্ক বাস্তবায়নকারী কোরিয়ান সংস্থা ইয়ংওয়ান কর্পোরেশন এবং কেইপিজেড চেয়ারম্যান কিহাক সুং। উপস্থিতি ছিলেন স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনা এফ জাবিন, ক্রিয়েটিভ ক্রাউডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নওশের রহমান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, এই হাইটেক পার্কে গার্মেন্টস, টেঙটাইল, সুজের পাশাপাশি আইটি সেক্টরে বিনিয়োগ করা হবে। অল্প সময়ের মধ্যে আইটি সেক্টর ও কেইপিজেডে আরো ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন উদ্যোক্তারা। পার্ক বাস্তবায়নে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের মধ্যে ত্রি-পক্ষীয় চুক্তি সম্পাদিত হয়।
উদ্যোক্তারা জানান, এই পার্ক থেকে শিক্ষা, প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে। ইয়ংওয়ান কর্পোরেশন তাদের সহযোগী সংস্থা টেকভিশন (বিডি) লিমিটেডের মাধ্যমে এই পার্কে প্রায় ২শ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানা গেছে। এসব বিনিয়োগ সফটওয়্যার, শিল্পোন্নয়ন, ডাটা এন্ট্রি ও আউটসোর্সিং-এ দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছানোর স্মারক হিসাবে এই হাইটেক পার্কে ৪১ তলা বিশিষ্ট একটি আইটি ভবন নির্মাণ করা হবে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল ও কমিউনিটি কমপ্লেঙ থাকবে।
কেইপিজেড ইতিমধ্যে এই অঞ্চলে বড় ধরনের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। এর মধ্যে টেঙটাইল জোনে ১৭ লাখ বর্গফুট আয়তনের কারখানা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে অর্ধেক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে কারখানাটির। ভবিষ্যতে এটি পোশাক রপ্তানিকারকদের বৃহত্তম হাবে পরিণত হবে।
উল্লেখ্য, আইটি পার্কসহ সবগুলো প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কেইপিজেডে প্রায় ৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।