বাংলাদেশে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় চার হাজার ৯৯৬ মানুষের মৃত্যু এবং পাঁচ হাজার ৮৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ২০২০ সালের সড়ক দুর্ঘটনার এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেন নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, সংগঠনগুলোর প্রতিবেদন, টেলিভিশন ও অনলাইন পত্রিকার প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নিসচার হিসেবে, গত এক বছরে চার হাজার ৯২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রেলপথ ও নৌপথে দুর্ঘটনায় মোট ৩৪১ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে রেলপথে ১২৯ জন নিহত ও ৩১ জন আহত এবং নৌপথে ২১২ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হন। নিসচার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই এক মাসে ৪৪৭টি দুর্ঘটনায় ৪৯৫ জন নিহত ও ৮২৩ জন আহত হয়েছেন।
এরপর গত বছরের এপ্রিল ও মে মাসে তুলনামূলক কম দুর্ঘটনা ঘটেছে। এপ্রিলে ১৩২টি ও মে মাসে ১৯৬টি দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এই দুই মাসে দুর্ঘটনা কম হওয়ার পেছনের কারণ হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশে সাধারণ ছুটি ও লকডাউন থাকায় দুর্ঘটনা কম হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ এলাকায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এলাকায় কম দুর্ঘটনা ঘটেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে চালকরা তুলনামূলক কম গতিতে নিয়ন্ত্রণে রেখে যানবাহন চালানোর কারণে দুর্ঘটনা কম হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তবে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে নিসচার প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাব, টাস্কফোর্স কর্তৃক প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশনামা বাস্তবায়ন না হওয়া, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়া গাড়ি চালানোর প্রবণতা, দৈনিক চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো, লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগ দেওয়া অন্যতম কারণ।
এছাড়া পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং করা, বিরতি ছাড়াই দীর্ঘসময় ধরে গাড়ি চালানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো বন্ধে আইনের প্রয়োগ না থাকা, সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বৃদ্ধি, মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, একই রাস্তায় বৈধ ও অবৈধ এবং দ্রুত ও শ্লথ যানবাহন চলাচল এবং রাস্তার পাশে হাটবাজার ও দোকানপাট থাকার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে বলে জানায় নিসচা।