এই মাস মহান বিজয়ের মাস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ দিবাগত রাত্রে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। জাতির জনকের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সর্বত্র বেতার মাধ্যমে ঐ রাত্রে প্রচারিত হয়। জাতির জনকের নির্দেশে নিরস্ত্র বীর বাঙালি তার জাতিসত্তা এবং স্বকীয় অস্তিত্ব রক্ষার এই সংগ্রামে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ৯ মাস স্থায়ী রক্তক্ষয়ী এই সশস্ত্র সংগ্রামে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে মহান এই মাসের ১৬ তারিখ ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান হতে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করে অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ সকল ধর্মাবলম্বীর আবাসস্থল বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন সার্বভৌম ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম লাভ করে। স্বাধীনতার জন্য এতো অল্প সময়ের মধ্যে এতো রক্ত স্বাধীনতাকামী আর কোন জাতিকে দিতে হয়নি। করোনা মহামারি কারণে মুজিববর্ষে এবার বিজয় দিবসের সব অনুষ্ঠান সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্বাধীনতার পর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জারের ভাষায় ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হতে নানা চড়াই উৎরাই এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বিপুল জনসংখ্যা অধ্যূষিত ৩য় বিশ্বে বাংলাদেশের মত একটি নানাবিধ সমস্যা জর্জরিত দেশ কৃষি, শিল্প, সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অবকাঠামো সহ জাতীয় জীবনে সর্বক্ষেত্রে উন্নতি এবং অগ্রগতির যে ধারা অব্যাহত রেখেছে তা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসহ উন্নত বিশ্বের জন্যও এখন ঈর্ষনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আজ জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের মহাসড়কে এসে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন ছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইস্পাত দৃঢ় মনোবলের কারণে পদ্মাসেতুর মতো বিরাট একটি মেগা প্রকল্প আগামী ২০২২ সালে শেষ হতে যাচ্ছে। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু ৪১তম শেষ স্পানটি গত ১০.১২.২০২০ইং তারিখ বসানোর মাধ্যমে উভয় পাড়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। উভয় পাড়ে উৎসুক জনসাধারণ এখন পদ্মা পাড়ে স্বপ্নের সেতু দেখার জন্য ভীড় জমাচ্ছে বলে প্রচার মাধ্যম হতে জানা যায়। এর ফলে সারা বাংলাদেশ এখন রোড নেটওয়ার্কের মধ্যে এসেছে। এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো ক্ষণজন্মা একজন মহান নেতা এদেশে জন্ম না নিলে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের যেমন জন্ম হতো না, ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মতো দৃঢ়চেতা প্রধানমন্ত্রী না থাকলে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন ছাড়াও নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর বাস্তবায়ন সম্ভবপর হতো না। বিজয়ের এই মাসে পদ্মাসেতুর সফল বাস্তবায়ন বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। ২০২২ সালে এই সেতু যানবাহনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানা যায়।
স্বাধীনতা লাভের মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় আওয়ামী লীগের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা খন্দকার মোশতাক চক্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সামরিক বাহিনীর কয়েকজন বিপথগামী কর্মকর্তার যোগসাজশে ৩২নং ধানমন্ডীর বাসভবনে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট রাত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী খন্দকার মোশতাক এবং পরবর্তী দু’জন সামরিক শাসক স্লো পঁয়জনিং এর মতো এদেশের জনগণকে পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখেননি। তাদের আমলে আওয়ামী লীগারদের উপর অন্যায়, অত্যাচার, হামলা-মামলা জেল-জুলুম কোন কম করা হয়নি। আওয়ামী লীগের নাম ও নিশানা মুছে দিতে খুনী মোশতাক চক্র বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতা সর্বজনাব সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহমদ, এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল। তারপরও পাকিস্তানপন্থী এই প্রতিক্রিয়াশীল চক্র সফল হতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার পরও জাতির জনকের কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। মাঝখানে ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত ৫ বছর বিএনপি এবং ২০০৭-২০০৮ এই দু’বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দিলে ২০০৯ থেকে টানা তিন মেয়াদে অদ্যাবধি আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আছে।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহুবার হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছে। এর মাঝে এরশাদ শাসনামলে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাকালীন সময়ে চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানের জনসভায় পুলিশের নির্বিচার গুলি বর্ষণে ২৪জন নেতাকর্মী প্রাণ হারায়। ভাগ্যের জোরে শেখ হাসিনা নিশ্চিত মৃত্যুর হাত হতে বেঁচে যান। ঐ মামলায় ৫ জন আসামির মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণা করা হয়, যা এখনো কার্যকরের অপেক্ষায় আছে। ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনা এবারও বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাকালীন সময়ে পল্টনের জনসভায় আবারও গ্রেনেড হামলার শিকার হন। এবারও তিনি অল্পের জন্য ভাগ্যের জোরে বেঁচে যান। এই গ্রেনেড হামলায়ও ২৪জন নেতাকর্মী নিহত হয়। এর মাঝে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী নারীনেত্রী আই ভি রহমানও রয়েছে। এই মামলায় বিএনপি’র সাবেক মন্ত্রী লুৎফুরজামান বাবর ও আবদুস সালাম পিন্টুসহ মোট ১৯ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রদান করা হয়। এই মামলার রায়ও কার্যকরের অপেক্ষায় আছে।
তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্মের পর থেকে দেশের প্রাচীনতম এই রাজনৈতিক দলের পথচলা শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের ভিত্তিতে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামে এই রাজনৈতিক দল পথচলা আরম্ভ করে। জন্মের পর হতে পাকিস্তানের পূর্ব ভূ-খন্ড পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন, জেল-জুলুম সত্ত্বেও স্বাধিকার আন্দোলনের প্রশ্নে মুসলিম লীগের সমান্তরাল রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ রাজপথের আন্দোলন হতে কখনো সরে আসেনি। পাকিস্তান সৃষ্টির পর ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই স্লোগানের মাধ্যমে আন্দোলনের সূচনা হয়। পরবর্তীতে ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং ৭১ এর মুক্তি সংগ্রামসহ রাজপথে সব আন্দোলন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছে। এসব আন্দোলনের মধ্যমণি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর সহযোদ্ধা ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহমেদ, এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন মনসুর আলীসহ নিবেদিত প্রাণ একঝাঁক ত্যাগী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি আন্দোলনের সাথে ঢাকাসহ তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগসহ অন্যান্য প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন অকুণ্ঠ সমর্থন যোগায়। ছাত্ররা ছাড়াও আপামর জনসাধারণ আওয়ামী লীগের প্রতিটি আন্দোলনকে সমর্থন দিয়েছে। মুসলিম লীগের সমমনা ডানপন্থী কিছু রাজনৈতিক দল বাদে পূর্ব পাকিস্তানের বামপন্থী সব প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল প্রতিটি আন্দোলনে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে।
২০০৯ সাল হতে এখন পর্যন্ত পর পর টানা তিনবার তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সাথে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন অনেক ব্যবধান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাদামাঠা জীবনযাপন প্রণালী সবার জন্য অনুকরণীয় ছিল। ছাত্র নেতাদেরও তখন সহজ সরল জীবনযাপন করতে দেখা গেছে। তারা তখন সবার স্নেহভাজন ছিল। এখনকার মতো তখন তারা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ইত্যাদির মতো অপরাধের সাথে জড়িত হতো না। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে তখন থানা কিংবা প্রশাসনের অন্য কোথাও তদবির বাণিজ্যের সাথে জড়িত হতে দেখা যেতো না। এমনকি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের কোন সময় তদবির বাণিজ্যের সাথে জড়িত হতে দেখা যায়নি। রাজনৈতিক নেতৃত্ব তখন জনগণের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের কাজে নিয়োজিত থাকতো। তারা কখনো রাজনীতি বিক্রি করে আর্থিক উন্নয়নের কথা কখনো ভাবেনি। ৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর এই ধারার পরিবর্তন হয়। রাজনীতিতে তখন থেকে অর্থবিত্ত ও আরাম আয়েসের ছোঁয়া লাগতে আরম্ভ করে। অতিদ্রুত অর্থবিত্ত বানানোর এই রোগ মহামারি আকারে রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে। ৯১-তে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও এই ধারার পরিবর্তন আসেনি। বরং আগের চেয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনীতিবিদরা দেশ শাসন করে এবং আমলারা রাজনীতিবিদদের হুকুম তামিল করে। আমলাতন্ত্রের দুর্নীতি সব আমলে কিছু না কিছু ছিল। রাজনীতিতে কিন্তু দুর্বৃত্তায়ন আগে তেমন ছিল না। বাংলাদেশে ৭৫ এর পর হতে আরম্ভ হয়েছে। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। আগে যারা সারা জীবন চুঙ্গা ফুঁকিয়ে রাজনীতি করেছে সেই সব ত্যাগী রাজনীতিবিদরা এখন সাইড লাইনে বসে আছে। তাদের জায়গা দখল করেছে ব্যবসায়ী ও টাকাওয়ালারা। অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক আমলারাও কিন্তু এই দখল বাণিজ্যে পিছিয়ে নেই। অর্থের জোরে এদের অনেকে আজ মহান জাতীয় সংসদে আইন প্রণেতা। এদের মাঝে অর্থ পাচার, মানব পাচার, মাদক পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের জন্য লক্ষ্মীপুর ২ আসনের এম.পি কাজী শহীদুল ইসলাম পাপলুর নাম উল্লেখ্য। তিনি বর্তমানে কুয়েতে বিচারাধীন একটি মামলায় হাজতে আছে। আওয়ামী লীগের মাননীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর ভাষায় বলতে গেলে এখন আওয়ামী লীগে দুর্বৃত্তের প্রবেশ ঘটেছে। রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক শাহেদ, জে.কে.জি হেলথ্ কেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরী ও চেয়ারম্যান সাবরিনা চৌধুরী’র মতো আরও অনেকে রাজনীতির ছত্রছায়ায় টাকার পাহাড় বানিয়েছে। শামিয়া নুর পাপিয়া, জি.কে শামিমসহ আরও অনেক বহিরাগত পরিযায়ী পাখির মতো ঐতিহ্যবাহী এই রাজনৈতিক দলে ভিড়ে দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় তৈরি করেছে। এদের কারণে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এই দলের ভাবমূর্তি আজ ক্ষুণ্ন হতে চলেছে। এখনি এর রেশ টেনে ধরা মোক্ষম সময় এসেছে। এদের সাথে সাথে আমাদের দেশের উচ্চ পদস্থ সরকারি আমলারাও থেমে নেই। তারাও টাকার পাহাড় বানাচ্ছে এবং ঐ টাকা দেশের বাইরে পাচার করছে। এদের মধ্যে ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক শুধাংশু ভদ্র যাকে তার বন্ধুরা টাকা ভদ্র বলে ডাকতো তিনি কানাডায় ১২০ কোটি টাকা পাচারের জন্য নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন দেশত্যাগ করতে পারছে না। এ ধরণের ‘টাকা ভদ্রের’ অভাব এদেশে এখন নেই। সবার লক্ষ্য কানাডার বেগম পাড়া, মালয়েশিয়া অথবা সিঙ্গাপুরে অবসরের পর নিরাপদ জীবনযাপন। এতো রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই সোনার বাংলাকে এরা ভালবাসতে পারলো না- এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কিছু হতে পারে না। এদের জন্য সত্যিই করুণা হয়।
লেখক: কলামিস্ট, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম।