শোকাতুর শিল্পীরা

| শনিবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

অভিনেতা, নির্দেশক আলী যাকেরে মৃত্যুতে শোকে আচ্ছন্ন চলচ্চিত্র ও নাট্যাঙ্গন; প্রিয় শিল্পীকে হারিয়ে শোকাতুর সহশিল্পীরা শোক জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। চার বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে গতকাল শুক্রবার ভোরে রাজধানীর এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে তার। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক থেকে এক সময়ের ব্যস্ত টিভি অভিনেতা টনি ডায়েস লিখেছেন, ‘ছটলু ভাই, মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। ভালো থাকুন। আপনার শেখানো অভিনয়, মানবিক গুণাবলী আজও চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত জীবনে কাজে লাগানোর। সৌভাগ্য আমাদের জীবনের শুরুতেই আপনার কাছে থাকতে পেরেছিলাম। আপনি থাকবেন আমাদের মাঝেই, আমাদের হৃদয়ে। বিনম্র শ্রদ্ধা।’ খবর বিডিনিউজের।
এই প্রজন্মের টিভি নাটক নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ তার ক্যারিয়ারের প্রথম ফিকশনে অভিনয়শিল্পী হিসেবে পেয়েছিলেন আলী যাকেরকে। সেই স্মৃতি তুলে এনে বান্নাহ লিখেছেন, জীবনের প্রথম ফিকশন থেকেই আমি স্যারের আশীর্বাদ ধন্য ছিলাম। আমি ভাগ্যবান। আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান। স্যারকে নিয়ে আমার স্মৃতিগুলো অমূল্য। এমন একটি সকাল কোনদিনও চাইনি। কিন্তু এই বুকফাটা কষ্টের সকালটা এলো। আসতেই হলো। অনেক কিছু বলতে চাই, বলতে ইচ্ছা করছে কিন্তু লিখতে শক্তি পাচ্ছি না। মহান আল্লাহ আপনাকে ভালো রাখুন প্রিয় আলী যাকের স্যার। মঞ্চনাটকে যে কয়কটি চরিত্রের জন্য দর্শকদের হৃদয়ে অমলিন থাকবেন তার মধ্যে অন্যতম সৈয়দ শামসুল হকের ‘নুরুলদিনের সারা জীবন’ নাটকের নুরুলদিন চরিত্র। আলী যাকেরকে শ্রদ্ধা জানাতে সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা থেকে উদ্ধৃত করেছেন এই প্রজন্মের টিভি নাটকের অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। ‘আবার নূরলদীন একদিন আসিবে বাংলায়, আবার নূরলদীন একদিন কাল পূর্ণিমায়, দিবে ডাক, জাগো, বাহে, কোনঠে সবায়?’ টিভিনাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা গোলাম সোহরাব দোদুল বলছেন, শিল্পীর মৃত্যু নেই। শুধুই দেহত্যাগ। অনন্ত যাত্রা আনন্দের হোক। আত্মার শান্তি কামনা করছি। প্রিয় মানুষ ছটলু কাকা।
১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের রতনপুর ইউনিয়নে আলী যাকেরের জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করে করাচিতে একটি ব্রিটিশ বিজ্ঞাপনী সংস্থায় তার কর্মজীবন শুরু হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু হয় এশিয়াটিক থ্রিসিঙটির, মৃত্যুর সময় যে কোম্পানির গ্রুপ চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।
১৯৭২ সালের আরণ্যক নাট্যদলের ‘কবর’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে পথচলা শুরু করেন আলী যাকের। অভিনয়, নির্দেশনার বাইরে তিনি ছিলেন একজন নাট্যসংগঠক; পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন লেখালেখির সঙ্গে। আলী যাকেরের স্ত্রী সারা যাকেরও মঞ্চ আর টেলিভিশনের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ইরেশ যাকের ও শ্রেয়া সর্বজয়া তাদের দুই ছেলে-মেয়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘ছটলু ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা’
পরবর্তী নিবন্ধদেশে মোবাইল টাওয়ার শেয়ারিং শুরু