৭২ ঘণ্টার নতুন হিট অ্যালার্ট জারি

২৪ দিন দাবদাহ, ইতিহাসে সর্বোচ্চ

| শুক্রবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ at ৭:৩৯ পূর্বাহ্ণ

এই মৌসুমে তাপপ্রবাহ সইতে হলো ২৪ দিন; এর আগে কোনো বছরই এতো সময় দাবদাহ দেখেনি বাংলাদেশ। এরই মধ্যে চলমান তাপপ্রবাহ আরও সপ্তাহখানেক চলার আভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। এবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপপ্রবাহ শুরু হয় ৩১ মার্চ। মাঝে ৯ ও ১০ এপ্রিল দেশের কোথাও তাপপ্রবাহ ছিল না। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে রেকর্ড ২৪ দিন দাবদাহ হয়েছে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, ‘প্রতি এপ্রিল মাসেই আমাদের তাপপ্রবাহটা আসে। কিন্তু এ বছরের স্থায়িত্বটা একটু বেশি।’ শাহনাজ জানান, এর আগে সবচেয়ে বেশি দিনের তাপপ্রবাহের রেকর্ড হয়েছিল ২০১৯ সালে। ওই বছর ২৩ দিন দাবদাহ ভুগতে হয় মানুষকে। আর গত বছর তাপপ্রবাহ চলে ১৮ দিন।

এদিকে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থায় দুই দফায় টানা ছয় দিনের সতর্কবার্তার পর গতকাল নতুন করে আরও তিন দিনের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা বলেছে, দেশের উপর দিয়ে চলমান তাপ প্রবাহ বৃহস্পতিবার (গতকাল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। বাংলাদেশে চলতি মৌসুমে গত কয়েকদিন ধরে টানা তীব্র গরমের মধ্যে চতুর্থ দফায় হিট অ্যালার্ট জারি করা হলো। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এখন প্রায় ৪৫টির মতো জেলার ওপর দিয়ে এই দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন মাত্রায়। সংস্থাটি বলছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু থেকে তীব্র ধরনের তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং এ সময় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়বে। খবর বিডিনিউজ ও বিবিসি বাংলার।

আগামী তিনদিনে তাপমাত্রা আর খুব একটা বাড়বে না, যদিও গরমও খুব একটা কমবে না। তবে এবারের তাপপ্রবাহের পর একটু একটু করে বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে আশা করছে আবহাওয়া বিভাগ। বাংলাদেশে সাধারণত কোনও স্থানের তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে সেখানে সতর্কবার্তা জারি করা হয়।

তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে, সেটিকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে থাকেন আবহাওয়াবিদরা। এছাড়া তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে, সেটিকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। আর তাপমাত্রা যদি ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে যায়, তখন তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

বাংলাদেশে এবার যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনাসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কিছু জেলার ওপর দিয়ে গত কিছুদিন ধরে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সবচেয়ে বেশী তাপমাত্রায় রেকর্ড হয়েছে মোংলায়, ৪১ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বাংলাদেশে এর আগে, ২০২৩ সালকে বাংলাদেশের উষ্ণতম বছর হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন আবহাওয়াবিদরা। ওই বছর একটানা তিন সপ্তাহ পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলার রেকর্ড হয়েছিলো। ফলে এ নিয়ে পরপর দুই বছর প্রায় একই ধরনের দাবদাহের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

নতুন করে তিন দিনের হিল অ্যালার্ট জারি হলেও আবহাওয়া বিভাগ আশা করছে চলতি সপ্তাহের শেষ থেকেই উত্তর পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে। ২৯ তারিখের দিক থেকেই সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে এখন পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে তাতে আগামী মাসের শুরুতে মোটামুটি ভালোই বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, বলছিলেন আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাপানের বদলে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের পণ্য সরবরাহ করে টাকা আত্মসাৎ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে কঠোর নিরাপত্তা বলয় সিএমপির