১৩৫ পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপ

আছে ফুল ফল প্রসাধনী আসবাব ।। লক্ষ্য আমদানি ব্যয় হ্রাস ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ২৫ মে, ২০২২ at ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ

আমদানি ব্যয় হ্রাস ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিদেশি ফল, ফুল, আসবাবপত্র ও প্রসাধন জাতীয় ১৩৫টি এইচএস কোডভুক্ত পণ্যের উপর আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শূন্য ও ৩ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (রেগুলেটরি ডিউটি) আরোপ করা হয়েছে। গত সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারির সঙ্গে সঙ্গে তা সোমবারই কার্যকর হয়েছে। খবর বাসস ও বিডিনিউজের।
এনবিআর জানায়, আমদানি নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি কোভিড পরবর্তী অর্থনীতি পুনর্গঠন এবং বিলাসবহুল পণ্যের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সংস্থাটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ ফুল ও ফল চাষে যথেষ্ট সমৃদ্ধশালী। তাই নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের ফলে দেশীয় ফুল ও ফল চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাবে এবং ফুল ও ফল চাষে উৎসাহিত হবে। এতে করে দেশের প্রান্তিক চাষিরা লাভবান হবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে আশা করছে।
এনবিআর বলছে, বর্তমানে দেশে উৎপাদিত আসবাবপত্র ও প্রসাধন সামগ্রী যথেষ্ট মানসম্পন্ন এবং দেশের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম। আসবাবপত্র ও প্রসাধনীর উপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের ফলে বিদেশি পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশীয় শিল্পের বিকাশ ঘটবে। পাশাপাশি এ ধরনের পণ্যের অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিতকরণের ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং রাজস্ব আহরণে ইতিবাচক ভুমিকা রাখবে।

নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা পণ্যের তালিকায় আছে আসবাবপত্র ও আসবাবের কাঁচামাল, গাড়ি ও গাড়ির ইঞ্জিন, যন্ত্রাংশ, রড ও লোহাজাতীয় পণ্য, সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল ফ্ল্যাই অ্যাশ, ফল, চাল, প্রসাধনসামগ্রী এবং ভোগ্যপণ্য।

২০ শতাংশ হারে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসেছে কাঠ ও লোহার আসবাব এবং আসবাবের কাঁচামাল, পিকআপ ও ডাবল কেবিন পিকআপ ভ্যানে ২০ শতাংশ এবং গাড়ির ইঞ্জিনে ১৫ শতাংশ। এছাড়া টায়ার, রিম ইত্যাদির ওপর ৩ থেকে ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। নির্মাণসামগ্রীর কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত রড, বিলেট ইত্যাদির উপর ৩ থেকে ১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসেছে। সিমেন্ট খাতের অন্যতম কাঁচামাল ফ্লাই অ্যাশ আমদানিতে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসানো হয়েছে।
অঙিজেন, নাইট্রোজেন, আর্গন, প্রাথমিক চিকিৎসাসামগ্রী আমদানি করতেও ১৫ শতাংশ হারে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসানো হয়েছে। ফাইবার অপটিক ও বিভিন্ন ধরনের তারে ৩ থেকে ১০ শতাংশ হারে শুল্ক বসেছে।

আপেল, আঙুর, লেবুজাতীয় ফল, কলা, ডুমুর, আনারস, পেয়ারা, আম, অ্যাভোকাডো, তরমুজ, নানা জাতের বাদাম আমদানিতেও ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে এনবিআর।

একইভাবে শেভিং ক্রিম, আফটার শেভ লোশন, সানস্ক্রিন, চুলে ব্যবহৃত রঙ বা বিভিন্ন প্রসাধনী, পারফিউম ও বডি স্প্রেসহ বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী আমদানিতেও ২০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রনমূলক শুল্ক আরোপ করেছে এনবিআর।

প্রসঙ্গত, এতদিন আমদানি পর্যায়ে তিন হাজার ৪০৮টি পণ্যে ৩ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা আরডি প্রযোজ্য ছিল। এর মধ্যে বিলাসবহুল পণ্য হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ পণ্যে উচ্চ শুল্ক ছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাতিজাকে ফাঁসাতে বাবার হাতে কন্যা শিশু খুন!
পরবর্তী নিবন্ধজট খুলেছে বিলাসবহুল ১০৮ গাড়ির