হ্যাচারিতে ফুটছে জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিমের ডিম

২৭০টি বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৪ মার্চ, ২০২৩ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

অ্যারিবদা বা একযোগে ডিম পাড়তে আসার জন্য বিশ্ববিখ্যাত অলিভ রিডলি কাছিম বা জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিমের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে প্রথম হ্যাচারিতে ফোটা ২৭০টি বাচ্চা গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাগরে অবমুক্ত করা হয়।

 

কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে পেঁচারদ্বীপ সৈকতে গত জানুয়ারি মাসে ডিম পাড়তে আসা তিনটি কাছিমের তিন শতাধিক ডিম থেকে এই বাচ্চাগুলো ফুটে। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের তত্ত্বাবধানে ইউএসএআইডির অর্থায়নে নেচার কনজার্ভেশন ম্যানেজমেন্টের (নেকম) ইকোলাইফ প্রকল্পের কাছিম হ্যাচারিতে বাচ্চাগুলো ফোটানো হয়। ডিমগুলো ৬০ থেকে ৬৫ দিন হ্যাচারিতে রাখার পর ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে। অবমুক্ত বাচ্চাগুলো ছাড়ার পর ৩০৩৫টি বাচ্চা মারা পড়তে দেখা যায়।

কচ্ছপের বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করার সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম, নেকমইকোলাইফ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক ড. শফিকুর রহমান প্রমুখ।

. শফিকুর রহমান জানান, চলতি বছর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্নস্থানে ৫৮টি কাছিম ৭ হাজার ৫২৮টি ডিম পেড়েছে। এরমধ্যে পেঁচারদ্বীপে ১৮টি কচ্ছপ দুই হাজার ৩০টি ডিম দিয়েছে, শীলখালীতে ৯টি কচ্ছপ ১ হাজার ২৩৯টি ও শাহ পরীরদ্বীপে ৩১টি কচ্ছপ ৪ হাজার ২৫৯টি ডিম দিয়েছে। আর সেগুলো

সংগ্রহ করে এখন পেঁচারদ্বীপ, শীলখালী ও শাহপরীরদ্বীপের ৩টি হ্যাচারিতে ফুটানো হচ্ছে। আশা করি সামুদ্রিক কাছিম আরও কয়েকদিন ডিম দিতে আসবে।

ধীরে ধীরে কাছিমের ডিম পাড়ার হার বাড়ছে দাবি করে তিনি বলেন, গত তিন বছরের তুলনায় এ বছর কচ্ছপ ডিম বেশি দিয়েছে। ২০২২ সালে ৫৪টি স্পটে কচ্ছপ ডিম দিয়েছিল ৫ হাজার ৭৬৩টি। এর আগের বছর ২০২১ সালে ডিম দেয় ৪ হাজার ৭১৩টি।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম বলেন, সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে জনসচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। তবে বনবিভাগ কিংবা নেকম কর্মকর্তারা অবমুক্ত বাচ্চাগুলোর লিঙ্গ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে পারেননি। এই তথ্য রাখা হয় না বলে জানান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম ও নেকম কর্মকর্তা ড. শফিক।

সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা রিডলি কাছিমের বাচ্চার লিঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। কারণ ২৮ ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রায় ডিমগুলো স্ত্রী প্রজাতির হয় এবং ২৯৩০ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রায় ডিমগুলো পুরুষ প্রজাতির হয়।

পুরুষ প্রজাতির কাছিমগুলো কখনও উপকূলে না ফিরলেও স্ত্রী কাছিমেরা ১৯২০ বছর পর পূর্ণ বয়স্ক হলে ডিম পাড়তে জন্মস্থানে ফিরবে। তবে এক হাজার বাচ্চার মধ্যে মাত্র একটি বাচ্চা নির্বিঘ্নে সমুদ্রে বড় হয়ে জন্মস্থানে ফিরে আসার সুযোগ পায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুবাইয়ে নজরদারিতে আরাভ খান
পরবর্তী নিবন্ধব্রেক কাজ করছে না, তারপরও বড় দুর্ঘটনা যেভাবে এড়ালেন চালক