হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন ফাঁস হয়নি, সেটি গুজব : ঢাবি উপাচার্য

জোর করে হলে প্রবেশ করলেন শিক্ষার্থীরা

আজাদী ডেস্ক | শনিবার , ২ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:০২ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে প্রায় এক বছর অপেক্ষায় থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিল ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমান উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এই ভর্তিযুদ্ধ শুরু হয়। আগের রাতে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের কথা ছড়িয়ে পড়লে সেটি গুজব বলে উড়িয়ে দেন উপাচার্য। এদিকে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অমান্য করে জোর করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অমর একুশে হলে প্রবেশ করেছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তাদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা তা অগ্রাহ্য করে।
প্রশ্ন ফাঁসের কথা গুজব : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কথা গুজব বলে উড়িয়ে দিয়ে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। গতকাল ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
মহামারী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের কষ্ট কমাতে এবার প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের আট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার ভর্তি পরীক্ষার একদিন আগেই সকল কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে প্রশ্নপত্র। একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশটসহ টাকার বিনিময়ে ‘ক’ ইউনিটের প্রশ্ন সরবরাহ করা হচ্ছে বলে আগের রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের যে কথা বলা হচ্ছে, সেটি গুজব। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি বলেন, সকল ধরনের জালিয়াতি চক্রের মূলোৎপাটন করা আমাদের দৃঢ় প্রত্যয়। সেটি এরই মধ্যে আমরা করেছি। বিভিন্ন সময় জালিয়াতি করা ৮৯ শিক্ষার্থীকে আমরা ভর্তি বাতিল করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। মহামারী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে অভিভাবকদের ভিড় না করার অনুরোধ জানান তিনি।
প্রায় এক বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার বেলা ১১টায় বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। ৬০ নম্বরের বহুনির্বাচনী, ৪০ নম্বরের লিখিতসহ মোট ১০০ নম্বরের এই পরীক্ষা শেষ হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়। ‘ক’ ইউনিটের ১ হাজার ৮১৫টি আসনের বিপরীতে এবার ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিলেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৭ জন শিক্ষার্থী। এই হিসেব ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনের জন্য প্রার্থী গড়ে ৬৫ জন। আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
জোর করে হলে প্রবেশ শিক্ষার্থীদের : বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত অমান্য করে জোর করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অমর একুশে হলে প্রবেশ করেছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা হলে জোরপূর্বক প্রবেশ করেন। এর আগে দুপুর ১টা থেকে তারা হলের গেটে অবস্থান নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একুশে হলে প্রবেশ করে রুমের জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে শুরু করেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর কাছে হল রুমের চাবি না থাকায় তারা তালা ভেঙে প্রবেশ করেন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষ ড. ইশতিয়াক এম সৈয়দ ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাকে আগামী চারদিন হলে থাকার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেন। পরে শিক্ষকরা হল থেকে বের হয়ে যান।
হলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে স্যাররা মিটিংয়ে বসেছেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা পকেট গেইট দিয়ে হলের ভেতরে প্রবেশ করেছেন।
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য হলগুলোতেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা হলে ওঠার পরিকল্পনা করছেন বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ১
পরবর্তী নিবন্ধআতংকিত গ্রামবাসী, হয়নি মামলা