হালদার পানির গুণগত মান স্বাভাবিক

১১ ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটার

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

দেশের মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীর পানির ১১টি ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটারে গুণগত মান স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। নদীর পাঁচ পয়েন্ট থেকে পানি সংগ্রহ এবং নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষার পর হালদা গবেষক ড. সফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত শনিবার হালদা নদী পরিদর্শন এবং পানির নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি।
নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, হালদা আর কর্ণফুলী নদীর সংযোগ অংশের কাছাকাছি মদুনাঘাট এলাকায় হালদার পানিতে অঙিজেনের পরিমাণ সামান্য কম পাওয়া গেছে। তবে তা আশঙ্কাজনক নয়।
হালদা নদী ও বোয়ালিয়া খালের পানি এবং প্লাংকটন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন ড. সফিকুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি বলেন, একটি জলজ বাস্তুসংস্থানের জন্য ফাইটোপ্লাংকটন (উদ্ভিদ কণা) মুখ্য উৎপাদক। হালদায় এমন ৭৪ প্রজাতির ফাইটোপ্লাংকটন রয়েছে। একইসঙ্গে জু-প্লাংকটন (প্রাণিকণা) রয়েছে ৭১ প্রজাতির। জু-প্লাংকটন ফাইটোপ্লাংকটনকে খাবার হিসেবে গ্রহণ করে। ছোট মাছ জু প্লাংকটনকে, বড় মাছ ছোট মাছকে খাবার হিসেবে গ্রহণ করে। এভাবে জলজ বাস্তুসংস্থান পরিচালিত হয়। আবার এসব প্লাংকটনের উপস্থিতির মাধ্যমে বায়োলজিক্যালি পানি দূষণ পরিমাপ করা হয়।
হালদার পানির গুণগত মান নিয়ে ড. সফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার দিনভর হালদাতেই ছিলাম। মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও বিভিন্ন অংশে জেলেরা অবৈধভাবে মাছ ধরছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। আমি নাজিরহাট, পেশকারহাট, সাত্তারঘাট, রামদাশহাট, মদুনাঘাট পয়েন্ট থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছি।
তিনি বলেন, যে পাঁচটি পয়েন্ট থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছি সেখানে লবণাক্ততা নেই বললেই চলে। ফ্রি কার্বন ডাই অঙাইড ছিল ৮ মিলিগ্রাম/লিটার, ৬ মিলিগ্রাম/লিটার, ৯ মিলিগ্রাম/লিটার, ৮ মিলিগ্রাম/লিটার এবং ৯ মিলিগ্রাম/লিটার। স্বাভাবিক কার্বন ডাই অঙাইডের মাত্রা ৫ মিলিগ্রাম/লিটার থেকে ১০ মিলিগ্রাম/লিটারের মধ্যে ছিল। একইসাথে অঙিজেনের পরিমাণও স্ট্যান্ডার্ড মান ৫ মিলিগ্রাম/লিটার এর সামান্য উপরে ছিল। শুধুমাত্র মদুনাঘাটে অঙিজেনের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬ মিলিগ্রাম/লিটার। মদুনাঘাট অংশটি কর্ণফুলীর সঙ্গে সংযুক্ত অংশের কাছাকাছি হওয়ায় এমনটা হয়েছে। এটি আশঙ্কাজনক নয়। তবে অঙিজেনের মাত্রা ২ মিলিগ্রাম/লিটারের নিচে নেমে গেলে মাছ মারা যাবে।
শনিবারের সংগৃহীত নমুনায় পরীক্ষালব্ধ ফলাফল নিয়ে তিনি বলেন, পানিতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ, টোটাল হার্ডনেস, টোটাল অ্যালকালিটি, তাপমাত্রা, ট্রান্সফারেন্সি, পিএইচ, ইলেকট্রিক্যাল কনডাক্টিভিটি, টিডিএসের মান স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যে ছিল। এটি শুভ লক্ষণ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্লিপ ছাড়াই দেয়া হচ্ছে ডিজেল
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে কাল টিকা পাবেন সাড়ে তিন লাখ মানুষ