হাটহাজারীতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুনের অভিযোগ

হাটহাজারী প্রতিনিধি | বুধবার , ২৫ নভেম্বর, ২০২০ at ৪:১৯ অপরাহ্ণ

হাটহাজারীতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মো. শরিফ(২২) নামে এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
তিনি মোহরা এলাকার সুনাইর পিতার বাড়ির প্রবাসী নুরন্নবীর পুত্র।
আজ বুধবার (২৫ নভেম্বর) ১৪নং শিকারপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কুয়াইশ এলাকার ভট্টচৌধুরী বাড়ি এলাকার একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে।
স্থানীয়, পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিহত শরিফের রাকিব নামে এক বন্ধু তাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে কিন্তু রাতে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
আজ বুধবার স্থানীয় লোকজনের তথ্যানুসারে শরিফকে খুঁজতে গিয়ে দক্ষিণ কুয়াইশ এলাকার ভট্টচৌধুরী বাড়ি সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত ডোবায় তার লাশ দেখে মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়িকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।
নিহত শরিফের খালাতো ভাই মো. বাবলু জানান, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মো. শরিফকে রাকিব নামে তার এক বন্ধু ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। শরিফকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন দেখেছে। তাদের কথার সূত্র ধরে আজ বুধবার ভট্টচৌধুরী বাড়ী সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
১৪নং ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দীক জানান, হাটহাজারী উপজেলা ও চান্দগাঁও থানার সীমান্ত এলাকা দক্ষিণ কুয়াইশ, উত্তর মোহরা বস্তি এলাকায় শিল্প নগরীর অসংখ্য লোকজন বাসা ভাড়া করে বসবাস করে। এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ে দুই গ্রুপ সবসময় মুখোমুখি অবস্থানে থাকে।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কিছু অস্ত্র ও মুখোশধারী শতাধিক দুর্বৃত্ত স্থানীয় মফিজুর রহমানের ভবনে হামলা করে ঘরের কাঁচের জানালা ভাঙচুর করে। শরিফ হত্যার ঘটনা মাদক ব্যাবসার জের হতে পারে।
এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসন ও পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জব্বারুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।
শরিফ হত্যার ঘটনাকে তিনিও মাদক ব্যাবসার জের বলে উল্লেখ করে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলে তদন্তপূর্বক ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান।

খুন হওয়া শরিফের ছোট বোন পাখি আক্তারে আহাজারি

এদিকে শরিফের হত্যার ঘটনা তার পরিবার অবহিত হওয়ার পর পরিবারের স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
আজ বুধবার গণমাধ্যমকর্মীরা বেলা পৌনে ১টার দিকে তার বাড়িতে গেলে এ অবস্থা দেখা যায়।
নিহতের মা জাহানারা বেগম ও ভাই মো. আরিফ ও মো. রুবেল তার লাশ নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে চলে গেছে। বাড়িতে রয়েছে তার একমাত্র ছোট বোন ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া পাখি আক্তার। তার আহাজারিতে এলাকায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
নিহত শরিফদের বাড়ি ছিল এক সময় ভোলা জেলার লাল মোহন এলাকায়।
কাজের তাগিদে শরিফের বাবা নুরুন্নবী চট্টগ্রাম এসে মোহরা এলাকার সোনাইর পিতার বাড়ির জাহানারা বেগমকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছিল।
তাদের তিন ছেলে এক মেয়ের মধ্যে নিহত শরিফ ছিল ৩য়।
শরিফ হত্যাকাণ্ডে পরিবারের সাথে এলাকাবাসীর মধ্যেও শোকের ছায়া নেসে এসেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিয়ানমার থেকে ফিরেছে আটক ৯ জেলে
পরবর্তী নিবন্ধবান্দরবানের থানচিতে এক বছরে সেতুতে তিনবার ফাটল