সুড়ঙ্গে তেলের মজুদ (ভিডিও দেখুন)

নগরীর কর্ণফুলী মার্কেটে অভিযান ।। ১ হাজার ৫০ লিটার উদ্ধার, জরিমানা ।। ফটিকছড়িতে দোকানির বাড়ি থেকে উদ্ধার ২৩২৮ লিটার

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৯ মে, ২০২২ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

তেল নিয়ে চলছে তেলেসমাতি। খুচরা দোকানে বাড়তি দামেও মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। তেল আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের কাছে অসহায় সাধারণ মানুষ। গত এক বছরের ব্যবধানে তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ১শ শতাংশ। তাই রান্নায় অনেকে তেলের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন। আলোচনায় তেল। তেল কোথায়? তেল এখন সুড়ঙ্গে, ব্যবসায়ীর বাড়িতে।

নগরীর ২ নং গেটের কর্ণফুলী মার্কেটের মেসার্স খাজা স্টোর নামের দোকানের নিচে সুড়ঙ্গে মজুদ করা ১ হাজার ৫০ লিটার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল উদ্ধার করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ ঘটনায় দোকানের মালিক আবদুল হালিমকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে উদ্ধারকৃত এসব সয়াবিন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়।

এদিকে গত শনিবার রাতে ফটিকছড়ির বাগান বাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ গজারিয়া গ্রামের মুদি দোকানি আকতার হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩২৮ লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়। পরে উদ্ধারকৃত এসব তেল ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে বিক্রি করা হয়। কর্ণফুলী মার্কেটের অভিযান প্রসঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজউল্লাহ বলেন, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আমরা আজ (গতকাল) বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ও ২ নং গেটের কর্ণফুলী মার্কেটে অভিযান চালাই। কর্ণফুলী মার্কেটে খাজা স্টোরে অভিযানে দেখতে পাই, সামনে কয়েকটি সয়াবিনের বোতল রাখা হয়েছে। খুবই অল্প পরিমাণ। কিন্তু দোকানের নিচে পাটাতন দিয়ে আড়াল করে সুড়ঙ্গ তৈরি করে ফ্রেশ, তীর, রূপচাঁদা, পুষ্টিসহ বিভিন্ন কোম্পানির সয়াবিন তেল মজুদ করেছে দোকানি। আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে দোকানের মালিক প্রথমে নিজেকে কয়েকটি কোম্পানির ডিলার হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। কিন্তু পরে জানতে পারি এটি সত্য নয়। অবৈধভাবে তেল মজুদের অপরাধে খাজা স্টোরের মালিককে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ করা সয়াবিন তেলগুলো ভাউচার দেখে আগের দামে খুচরা দোকানে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

ফটিকছড়ির বাগান বাজার এলাকায় অভিযান প্রসঙ্গে ফটিকছড়ির সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলমগীর বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা মুদি দোকানি আকতার হোসেনের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযান দেখতে পাই, বাড়ির একটি রুমে ফ্রেশ ব্র্যান্ডের ২ হাজার ৩২৮ লিটার সয়াবিন মজুদ করেছে দোকানি। পরে আমরা সেই দোকানিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। সেই সাথে বাগান বাজার ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে সেইসব সয়াবিন তেল ভোক্তাদের কাছে বিক্রির জন্য নির্দেশনা দিই। ইউপি সদস্য আমাদের জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে প্রায় সব তেল বিক্রি হয়ে গেছে।

বাগান বাজার ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, উদ্ধারকৃত সয়াবিন তেলগুলো বিক্রির তদারকির জন্য আমাকে উপজেলা প্রশাসন থেকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমি আজ (গতকাল) সারা দিন ছিলাম। শেষের দিকে ৭-৮ কার্টন বিক্রি হয়নি। এগুলো আগামীকাল (আজ) বিক্রি হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩৮ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকসার্স এসোসিয়েশন। এছাড়া ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন ৯৮৫ টাকায় নির্ধারণ করে। অপরদিকে খোলা সয়াবিন তেল ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে ১ লিটার ১৮০ টাকা ও পাম তেল ৪২ টাকা বেড়ে ১ লিটার বিক্রি হবে ১৭২ টাকায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারিভাবে আমদানি, বন্ধ কারখানা সচল ও বাজারজাতের পরামর্শ
পরবর্তী নিবন্ধসারের গোডাউনসহ চার বসতঘর পুড়ে ছাই