সুধীররঞ্জন খাস্তগীর : লেখক ও চিত্রশিল্পী

| শুক্রবার , ২৭ মে, ২০২২ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

সুধীররঞ্জন খাস্তগীর। বঙ্গীয় শিল্পকলার ভারতীয় চিত্রকর ও চিত্রকলা প্রশিক্ষক ও লেখক। সুধীররঞ্জনের জন্ম ১৯০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। পিতা সত্যরঞ্জন খাস্তগীরের আবাসস্থল ছিল তৎকালীন বিহারের (বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের) গিরিডিতে। সেখান থেকে ১৯২৫ সালে প্রবেশিকা পাস করে আই.এ পড়তে শান্তিনিকেতনে আসেন। কিন্তু আই.এ পরীক্ষা না দিয়ে নন্দলাল বসুর অধ্যক্ষতাকালে কলাভবনে কয়েক বছর চিত্রাঙ্কনের সঙ্গে ভাস্কর্য শিক্ষা নেন। এখানে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছেও ভারতীয় রীতির শিল্পকর্মের শিক্ষা নেন এবং ঠাকুর বাড়ির সংস্পর্শে আসেন। রবীন্দ্র সংগীতের প্রতি তাই তার স্বাভাবিক আকর্ষণ ছিল।

বাঁশীও বাজাতে পারতেন। কলাভবনের পাঠ সমাপ্ত করে তিনি ভারত পর্যটনে বেড়িয়ে ১৯৩৪ সালে গেলেন গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া স্কুলে এবং ১৯৩৫ সালে দেরাদুনের দুন স্কুলে। এখানেই তিনি পরবর্তী দীর্ঘ ২০ বৎসর শিক্ষকতা করেন। মাঝে ১৯৩৭ সালে এক বৎসর তিনি ইউরোপ যান। লণ্ডনের রয়াল সোসাইটি অব আর্টস এর ফেলো নির্বাচিত হন। দেরাদুনে অবস্থান কালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য ইত্যাদির উপর নির্দেশনার কাজও করছেন এবং এ সময়ে জাতীয় স্তরে খ্যাতি অর্জন করেন। উত্তরপ্রদেশ সরকারের আমন্ত্রণে লক্ষ্ণৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সরকারি আর্ট কলেজের অধ্যক্ষের পদে যোগদান করেন ১৯৫৬ সালে এবং ১৯৬২ সালে অবসর গ্রহণ করেন । তার ভাস্কর্য রচনা মূলতঃ ব্রোঞ্জ, প্লাস্টার ও কংক্রিটের মাধ্যমে। মনঃকল্পিত ভাস্কর্যের সাথে বহু বিশিষ্ট বিদেশী ও ভারতীয়ের মুখাকৃতি রচনা করেন।

তার অঙ্কিত চিত্র ও ভাস্কর্য দেশের অনেক মিউজিয়াম ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগৃহীত আছে। চিত্রগুলি ভারতীয় পুরাণ কাহিনী আধারিত, নারী অবয়বে ও মনোমুগ্ধকর পল্লীদৃশ্যে পরিস্ফুট। তার রচিত গ্রন্থগুলি হল – ‘ডানসেস ইন লিনোকাট. ‘পেন্টিংস’, ‘স্কাল্পচার’, ‘পন্টিংস অ্যান্ড ড্রয়িংস্‌’। শিশুদের জন্য লেখেন – ‘তালপাতার সেপাই’।

আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ ও জীবনকথা দুটি বই হল -‘মাইসেল্ফ, ‘আমার এ পথ’। ভারতীয় শিল্পকর্মের জন্য ভারত সরকার ১৯৫৮ সালে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করে। সুধীররঞ্জন খাস্তগীর ১৯৭৪ সালে ২৭ মে মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধদেওয়ানহাট ব্রিজের নিচে ময়লা-আবর্জনার অপসারণ চাই