সুধাকণ্ঠ প্রেম

মহুয়া ভট্টাচার্য | শনিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২২ at ১২:১৭ অপরাহ্ণ

পর্ব-১

মামা আত্মরামের বোম্বের বাড়িতে কল্পনা তাঁর গানের রেকর্ড শুনেছিল। তখনই কল্পনার মা চিত্র পরিচালক আত্মরামকে বলেছিলেন- ‘আত্ম তুমি তাঁকে তোমার ছবিতে কাজ করতে ডাকছো না কেন?’ এর পরপরই আত্মরাম তার হিন্দি ছবি ‘আরোপ’-এ সংগীত পরিচালনার আমন্ত্রণ জানান তাঁকে।

এরই মাঝে একবার কল্পনার বাবাও সেই বাঙালি সংগীতশিল্পীকে তাদের বাড়িতে নেমন্তন্ন করেছিলেন। মামা আত্মরাম কল্পনা, তার ভাই দীলিপ, মামাতো বোন অঞ্জলিকে ডেকে বলেছিলেন ‘উনার গান শুনে দেখো! ব্রহ্মপুত্রের বার্ড! দেখো, কি অসাধারণ সংবেদনশীল কথার গাঁথুনি গানগুলোতে! কি জোরালো অথচ হৃদয়কে নাড়িয়ে দেওয়া সুর! গলার কারুকাজ!’

গানগুলোর বেশিরভাগই আসামের ভাষায় এবং বাংলাতে। গায়ক নিজেও আসামের সংগীতশিল্পী হিসেবে নিজের পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কিন্তু কল্পনা সেই সংগীতের বিন্দুবিসর্গ বুঝতে পারছে না। হিন্দি, ইংরেজি ছাড়া তার কোনো ভাষাতেই দখল নেই মোটেই।
প্রথমদিনের আলাপেই কল্পনাদের পুরো পরিবারই তাঁর কণ্ঠমুগ্ধ বলা যায়। কল্পনাদের বাড়িতে প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত গানের আসর চলেছে তাঁকে নিয়ে। কল্পনাই প্রথম দরজা খুলেছিল, অতিথি অভ্যর্থনা করছিল। কিন্তু চোখ ঘুরছিল অতিথির সমস্ত অবয়বে। মামা আত্মরাম পরিচয় করিয়ে না দিলে, কল্পনা আন্দাজই করতে পারতো – ইনিই সেই বিখ্যাত সংগীতশিল্পী যাঁর রেকর্ডিং তাদের বাসায় অহরহ শোনা হচ্ছে ইদানিং। মামা ব্যস্ত তাঁকে সংগীত পরিচালনার কাজে রাজি করানোতে।

মামার মুখে কল্পনা শুনেছে তিনি আসামের ছোট একটা গ্রাম থেকে উঠে এসে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছিলেন। কিন্তু একি! অমন হাড় জিরজিরে রোগা মানুষ। গায়ে একটি কমলা দাড়টানা শার্ট আর কালো প্যান্ট পড়া। তার ওপর গায়ের জামাটি বোধহয় সিগারেটের আগুন পড়ে ফুটো হয়ে আছে দুটো।

ভদ্রলোক সেই জামাটিই পরে চলে এসেছেন তাদের বাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে! মামা এ কাকে ধরে নিয়ে এল বুঝতে পারছে না কল্পনা। কিন্তু একটা বিষয় সে খুব খেয়াল করেছে মানুষটির তামা রংয়ের মুখটিতে হাসি ফুটলেই দুটো চোখের ভেতর থেকে অদ্ভুত আলোর দীপ্তি ছড়ায়। ভীষণ উজ্জ্বল দুটো চোখ আর হাসিতেই তাঁকে খুব আপন, কাছের মানুষ মনে হয় কল্পনার।

কল্পনাদের বাড়ির সকলেই প্রায় এই বাঙালি গায়কের কণ্ঠমুগ্ধ। সেদিন তাদের বাড়িতে গানের আসরে গাওয়া দুটো গান কল্পনার মনে গেঁথে গেছে একেবারে। ‘ দোলা হেই দোলা’ শুনে কল্পনা মনে মনে ঠিক করল সে ওই গায়কের রেকর্ড কিনবে। ঠিক হল স্কুল থেকে ফেরার পথে রেকর্ডের দোকানগুলোতে গিয়ে খোঁজ নিতে হবে।

পরদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে সবকটা দোকানেই ঢুঁ মারল কল্পনা। কিন্তু রেকর্ডের দোকানগুলোতে কেউ ওই গায়কের রেকর্ড রাখা তো দূর, নামও কেউ শুনেছে বলে মনে হলো না তার। কিন্তু কল্পনার তো তাঁর রেকর্ড চাই-চাই। বন্ধুদেরই একজন কল্পনাকে সন্ধান দিল ‘রিদম হাউস’-এর। ওখানে সেই গায়কের রেকর্ড দেখেছে সে। অতএব দে দৌড়!

রুদ্ধশ্বাসে কল্পনা রিদম হাউসে গিয়ে তাঁর রেকর্ডিংটি পেল বটে। কিন্তু টাকা তো তার নেই! অত টাকা সে পাবে কোথা থেকে। তাকে যে পকেট মানি দেওয়া হয় তাতে তো এই রেকর্ড কেনা সম্ভব নয়। ‘রিদম হাউস’-এ অবশ্য আরও একটি দারুণ সুযোগ রয়েছে। রেকর্ড কিনতে না পারলেও শ্রোতারা যতক্ষণ ইচ্ছে তার পছন্দের গানটি ওখানে বসেই শুনতে পারে। সেই সুযোগে বন্ধুদের নিয়ে প্রতিদিন একের পর এক গান শুনতে লাগল কল্পনা। এভাবে পুরো সপ্তাহ! কিন্তু বন্ধুদের আর কাহাতক ভালো লাগে এই ধীর লয়ের গান। কোথায় স্কুল শেষে কল্পনার গুল্লি-ডান্ডা, গাছে চড়া, বোম্বের পথে পথে খুঁজে পাউভাজি খাওয়া! কল্পনা কান গুঁজে পড়ে রয়েছে রিদম হাউসে!

পরের সপ্তাহে বন্ধুদের কারোই আর আগ্রহ নেই রিদম হাউসে গিয়ে গান শোনার। বিশেষ করে যে গানের এক লাইনও তাদের বোধগম্য নয়। অতএব রিদম হাউসে যাবার আর কোনো সঙ্গী পেল না কল্পনার। পরের পুরোটা সপ্তাহ দিদিমার বাড়িতে কাটিয়ে অবশেষে তাঁকে রাজি করানো গেল এই মর্মে যে, কল্পনার খুব জরুরি কিছু জিনিস কিনতে হবে। দিদিমা কল্পনার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তাই দিদিমার কাছেই একমাত্র টাকা চাইতে পারে সে। কারণ সে জানে দিদিমা এই টাকা আত্মসাৎ-এর বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন থাকবেন। তিনি কল্পনাকে বড্ড ভালোবাসেন।

কল্পনা দিদিমার টাকায় সেই রেকর্ডিং কিনে এমনভাবে বুকে জড়িয়ে বাসায় ফিরল যেন রেকর্ডিং নয়, গায়ককেই সে এই প্রথম বুকে জড়াল।
এরপর কল্পনার মামা আত্মরামের হিন্দি ছবি ‘আরোপ’-এ সংগীত পরিচালকের আমন্ত্রণ জানানো হলো তাঁকে। ‘আরোপ’ ছবিতে তিনি কল্পনাকে আরো একবার চমকে দিয়ে লতা মঙ্গেশকর ও কিশোর কুমারকে দিয়ে গাওয়ালেন। ‘নেনো মে দর্পণ, দর্পণ ম্যায় কোয়ি দেখুঁখিছে সুবহা সম’। পরপর আরো কয়েকটি কাজের সুবাদে এরপর থেকে তিনি বোম্বেতেই থাকবেন এবং তা কল্পনারই মামা আরেক বিখ্যাত চিত্র পরিচালক গুরু দত্তের পালি হিলের ফ্ল্যাটে। গুরু দত্ত বাবু বিপত্নীক। ভাগ্নী কল্পনার বয়েসী তাঁরও তিনটি সন্তান রয়েছে তরুণ, অরুণ, নিলা। তরুণ-অরুণ প্রায় কল্পনারই বয়সী। কলকাতার সেই গায়ক তার মামাবাড়িতে রয়েছে অথচ সে একটিবার দেখতে যেতে পারবে না তা কি হয়!
কিন্তু দুই মামাই তো সেখানে রয়েছেন। কল্পনা বাড়িতেই বা কি বলে যাবে! কিন্তু তাঁর সাথে একটিবার দেখা করতে কল্পনার মন চঞ্চল হয়ে আছে ভীষণ। তাঁকে কি কথা যেন বলার আছে।

অবশ্য তিনি যে ভাষায় গান করেন আসামিজ এবং বাংলা- তার কোনোটাই কল্পনা জানে না। বুঝতেও পারে না। ঠাকুরমার মুখে বাংলা কিছুটা শুনলেও কথা চালানোর জন্য মামাতো বোন অঞ্জলিকেই শেষ পর্যন্ত ধরতে হলো পালি হিলের মামার বাংলোতে নিয়ে যাবার জন্যে। কেবল ছোট ভাই দীলিপ যাবে তার দেহরক্ষী হয়ে।

মামা গুরু দত্তের বিরাট বাংলোর বিশাল একটি কক্ষ দেওয়া হয়েছে কলকাতার সেই বিখ্যাত সংগীত পরিচালককে। সকালবেলা বসে তিনি হয়তো আপন মনে সুর তুলছিলেন হারমোনিয়ামে, এমন সময় দরজায় দাঁড়ানো দুটি ষোল-সতেরো বছরের কিশোর-কিশোরী। তাদের দু’জনকেই অবশ্য তিনি আগেও দেখেছেন আত্মরামের বোন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ললিতা লাজমীর বাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে। ছেলেটি তো আত্মরামের, কিশোরীটি খুব সম্ভব ললিতা লাঞ্জমার মেয়ে। দুজনকেই দরজায় বাইরে অপেক্ষমাণ দেখে তিনি তাদের ডাকলেন ‘ভেতরে এসো’।
ধীর পায়ে দুজনেই এসে তাঁর সামনে পাতা সোফায় বসল। দীলিপের কৌতূহলী চোখ সারাঘরে বিচরণ করলেও কল্পনার সমস্ত মনযোগ নিবন্ধ রইলো সামনে বসা মানুষটির দিকে। তাঁর মুখে মায়াময় হাসি। তারার মত উজ্জ্বল দুটো চোখ। তিনি সামনের আড়ষ্ট দুটো কিশোর-কিশোরীকে দেখছেন। কল্পনাই প্রথম এগিয়ে এল কথা বলতে। যেহেতু তাঁকে কল্পনা কি সম্বোধন করবে তা নিয়ে দ্বিধান্বিত। তাই প্রথমেই সে বলল ‘আমি কি আপনাকে ভূপেন বলে ডাকতে পারি?’

তিনি হেসে বললেন, ‘তুমি আমায় ‘ভূপেন’ ডাকতে পারো, ‘ভূপ’ ডাকতে পারো ‘ভূ’ও ডাকতে পারো!

সারাঘরের আসবাবপত্রে চোখ বুলোতে থাকা দীলিপের এতক্ষণে তাদের কথায় কান গেল। ‘ওকি কল্পনা!’ তুমি উনাকে ‘ভূপেন’ বলে ডাকবে কেন! আমার মনে হয়, তুমি তাঁকে ‘ভূপেনদা’ কিংবা ‘ভূপেন কাকা’ বলে ডাকো। সেটাই বরং ভালো হবে, কি বল?’

দীলিপের কথা কল্পনার এক্কেবারে পছন্দ হল না, সে কিছুটা চোখ রাঙ্গিয়ে বলল
‘চুপ কর দীলিপ! আমি তোমার পরামর্শ চেয়েছিলাম?’
বোনের মৃদু চোখ রাঙ্গানিতে দীলিপ মিইয়ে গেল একেবারে। সে খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে যেতেই কল্পনা যেন একটু স্বস্তি পেল। এবার সে তার কথার ঝুড়ি উজাড় করে মেলে ধরলো। তার কথার বেশির ভাগটা জুড়েই কল্পনার বাবা। কল্পনার বাবা তাকে বেশি ভালোবাসে। তাই তার সব কথাতেই ঘুরে ফিরে বাবার কথাই কেবল চলে আসে।

কল্পনা ভূপনকে বলল, কলেজে তার একটিও ছেলে বন্ধু হয়নি এখনো। ভূপেন তাঁর ঠোঁটের কোণে হাসি ছড়িয়ে বলেন ‘সেকি! একটিও বন্ধু হয়নি তোমার! কি মুশকিল বলতো! তা তোমার কেমন বন্ধু চাই বল দেখি! কল্পনা একটুও ভেবে বলল ‘আমার বাবার মত।’
ভূপেন মেয়েটির বাবাকে দেখেছেন। অসাধারণ সদালাপী ও সুদর্শন পুরুষ। এই ষোলো-সতেরো বছরের অবুঝ কিশোরীটির মনের পুরোটাই যে তার বাবার দখলে। তা বুঝতে বাকি রইলো না আর। ভূপেন বললেন, ‘বাবাকে খুব ভালোবাসো বুঝি?’

‘ভীষণ! জানো ভূপেন, আমরা একসাথে ছবি দেখি, গান শুনি, বেড়াতে যাই। বাবা জানে আমি কি খেতে ভালোবাসি! কার লেখা আমার বেশি ভালো লাগে!’
‘তাই বুঝি! আচ্ছা, কোন বই প্রিয়?’
কল্পনা ঈষৎ লজ্জিত হয়ে বলে ফেলে ‘The exotic!’
‘আরেহ! সে তো আত্মা আর ভূতের . . .! আচ্ছা এবার বল, কি খেতে ভালোবাসো তুমি?’

ভূপেনের মনে হলো এই চঞ্চলা কিশোরীর নিষ্পাপ স্বীকারোক্তি, আবেগের হিম কুয়াশার চাদর মোড়া ঘরের কোণায় কোণায় উষ্ণতা ছড়াচ্ছে।
তখনই কল্পনা বলল, ‘আচ্ছা ভূপেন, তোমার বয়স কত?’
ভূপেন বললেন, ‘৪৫। কিন্তু বালিকা! মনে মনে আমি আজও ২০ বছরের যুবক!’

ইন্ডিয়া গেইটের কাছেই একটা হোটেলে উঠেছেন ভূপেন। তাঁর নতুন ছবির সঙ্গীত পরিচালনার জন্য। দিন দশেক থাকবেন। মামা আত্মরামের মুখে এ কথা শুনে কল্পনা মনে মনে প্রমোদ গুণতে লাগলো ভূপেনের হোটেলে তাঁর সাথে দেখা করতে যাবার।
কল্পনার বান্ধবী অরুন্ধতী, দুর্গা, নাভালকে নিয়ে সে চলে গেল ভূপেনের হোটেলে তাঁর সাথে দেখার করতে। ভূপেন এবারও কল্পনাকে আশ্চর্য করল তাঁর সুর, মেধা আর অসাধারণ গল্প শোনানোর দক্ষতা দিয়ে। অরুন্ধতী, দুর্গা, নাভালের সাথেও ভূপেন বেশ আড্ডা জমিয়ে ফেলেছেন। সন্ধ্যের আগে আগে অন্য বন্ধুরা সবাই বাড়ি ফিরে গেলেও সেই রাতে কল্পনা ভূপেনের হোটেলেই রয়ে গেল। এবং সেই প্রথম রাত, একটি পুরো রাত তারা দুজন একসাথে কাটালো।

ভূপেন পুরোপুরিভাবেই কল্পনার মনের মধ্যে আঁকা স্বপ্নের পুরুষটি হয়ে এলেন। কল্পনার সব স্বপ্নই ডানা মেলে উড়তে শুরু করেছে ভূপেনের জাদুর কাঠির স্পর্শে। কিন্তু স্বপ্ন বেশিদিন স্থায়ী হল না। কয়েক সপ্তাহ পরই কল্পনার মনে হলো সে গর্ভবতী! ভূপেনের সাথে কাটানো একটি রাতের মাশুল যে কি ভয়ংকর হতে পারে এবার সে বুঝতে পারছে। এ বিষয়ে অরুন্ধতী বিশারদ। তাই অরুন্ধতীর কাছেই গেল কল্পনা। বিজ্ঞ অরুন্ধতীর পরামর্শে কল্পনা সমস্ত ভূপেনকে বলল এবং এও জানালো এই সমস্যা সমাধানের জন্য তার ৫০০ টাকা প্রয়োজন। ভূপেন খুব ধীর স্থির মুখে ৫০০টি টাকা কল্পনার হাতে গুঁজে দিয়ে তাকে কাছে বসিয়ে চুলে বিনি কেটে বললেন, ‘কল্প, ভয় পেও না, পাশাপাশি হাত ধরে বসা কিংবা চুমু খাওয়াতে কেউ গর্ভবতী হয় না।’ কিন্তু এই বিষয়ে কল্পনা এতই ভীত যে, তার ভূপেনের কোনো কথাই বিশ্বাস হচ্ছে না। তবে পরদিন সকালে ভূপেনের কথাই সত্যি হলো। এবং ইউরেকা! সব ঠিক হয়ে গেল! কল্পনা বড় হয়েছে একটি সংস্কৃতি চর্চার চারণক্ষেত্রে। তাঁর দিদিমা একজন লেখিকা। মা ললিতা লাজমী নামকরা চিত্রশিল্পী। মায়ের নানা চিত্র প্রদর্শনীতে সে তার বাবার হাত ধরে গেছে দেখতে। নিজের মত করে চিত্রকল্প ভাবা কিংবা তৈরি করার একটি সুপ্ত বাসনা তার তৈরি হচ্ছে ইদানিং। তাতেই আগুনে ঘি ঢেলে দিতে এলেন বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার শ্যাম বেনেগাল। ভদ্রলোক তার মায়ের খুব চেনা। কল্পনার এখন ২১ চলছে। তার ইচ্ছে সে ডকুমেন্টারি বানাবে। মামা আত্মরামকে বলতেই তিনি হেসে উড়িয়ে দিলেন।

বোম্বেও ‘সান্তাব্রুজ’ হোটেলে এখন ভূপেনদার নতুন ঠিকানা। ছবির কাজে বোম্বেতে এলে এই হোটেলেই ওঠেন। কল্পনা এখন বেশিরভাগ সময়ই তাঁর সাথে কাটাতে চান। বাকি যে সময়টুকু ভূপেনদা কলকাতায় থাকেন দুজনের ফোনালাপ চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। মা ললিতা তার থিয়েটারের এক বন্ধুর কাছে শুনেছেন ভূপেনদা ও কল্পনাকে প্রায়ই একসাথে দেখা যাচ্ছে। হোটেল সান্তাব্রুজের লবিতেও তাদের দুজনকে দেখেছে কেউ কেউ। কল্পনার বাবা নেভিতে কাজের সুবাদে দীর্ঘ সময় সংসারে অনুপস্থিত। ছেলের দেখভাল করা, নিজের পেশাগত অবস্থান, উপরন্তু কিশোরী মেয়েটির এমন বিপথগামিতার কথা শুনে ললিতা পাগল প্রায়। এ নিয়ে মা-মেয়ের এক চোট হয়ে গেল সন্ধ্যায়। তখনও কল্পনা ল্যান্ড ফোনে কথা বলছিল কলকাতায় ‘ভূপেনদার সাথে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘বঙ্গবন্ধু মডেল’ বিশ্বস্বীকৃত
পরবর্তী নিবন্ধদীর্ঘসূত্রতার বেড়াজালে আইনের প্রয়োগ