সুকুমার রায় : ননসেন্স ছড়ার প্রবর্তক

| মঙ্গলবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ

সুকুমার রায় (১৮৮৭১৯২৩)। তিনি একাধারে লেখক, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও সম্পাদক। বাংলা সাহিত্যে ‘ননসেন্স ছড়া’র প্রবর্তক। সুকুমার রায়ের জন্ম ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে অক্টোবর কলকাতায়। তার বাবার নাম উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী। তিনি একজন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক। মা বিধুমুখী দেবী। সুকুমার রায়ের আদিনিবাস বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমার (বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলা) কটিয়াদি উপজেলার মসূয়া গ্রামে। তিনি গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর কলকাতার সিটি স্কুল থেকে এন্ট্রাস পাশ করেন। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বি এসসি. অনার্স করার পর সুকুমার মুদ্রণবিদ্যায় উচ্চতর শিক্ষার জন্য ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে বিলেতে যান। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে সুকুমার কলকাতাতে ফিরে আসেন। সুকুমার রায় একাধিক গুণের অধিকারী ছিলেন। অল্প বয়স থেকেই তিনি পিতার অনুপ্রেরণায় মুখে মুখে ছড়া রচনা ও ছবি আঁকার সঙ্গে সঙ্গে ফটোগ্রাফিরও চর্চা করতেন। কলেজ জীবনে তিনি ছোটোদের হাসির নাটক রচনা এবং তাতে অভিনয় করতেন। স্বদেশী আন্দোলনের সময় তিনি বেশ কিছু গান রচনা করেন এবং নিজে সেগুলি গেয়েছেনও। সুকুমার রায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য লেখার পাশাপাশি নিজ হাতে আঁকা অসাধারণ সব ছবি। পিতার মৃত্যুর পর তিনি পিতৃ প্রতিষ্ঠিত সন্দেশ পত্রিকা পরিচালনা ও সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। সুকুমার রায়ের প্রধান অবদান শিশুকিশোর উপযোগী বিচিত্র সাহিত্যকর্ম। কবিতা, নাটক, গল্প, ছবি সবকিছুতেই তিনি সূক্ষ্ম ব্যঙ্গ ও কৌতুকরস সঞ্চার করতে পারতেন। তাঁর কাব্যে হাস্যরসের সঙ্গে সমাজচেতনাও প্রতিফলিত হয়েছে।

তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি রচনা হলো: আবোলতাবোল, , পাগলা দাশু, বহুরূপী, খাইখাই, অবাক জলপান, শব্দকল্পদ্রুম, ঝালাপালা ইত্যাদি। এছাড়া বাংলা ও ইংরেজিতে রচিত তাঁর কিছু গুরুগম্ভীর প্রবন্ধও রয়েছে। সুকুমার রায় প্রেসিডেন্সিতে ছাত্র থাকাকালে ‘ননসেন্স ক্লাব’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন, যার মুখপত্র ছিল সাড়েবত্রিশভাজা। বিলেত থেকে ফিরে তিনি গঠন করেন ‘মানডে ক্লাব’। এখানে আলোচনা ও পাঠের সঙ্গে থাকত ভূরিভোজের ব্যবস্থা। তাই ব্যঙ্গ করে কেউ কেউ একে বলত ‘মণ্ডা ক্লাব’। সুকুমার রায় ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১০ শে সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধদৈনিক আজাদী সর্বমহলে প্রশংসিত