সীমার অসীম যাত্রা

কথাসুন্দরের ‘খেলাঘর’ এর ষষ্ঠ মঞ্চায়ন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ

যে মানুষটা পৃথিবীতে একা দাঁড়াতে ভয় পায় না, তার অদম্য ইচ্ছাশক্তির সাথে কেউ পেরে উঠে না। এটাই বাস্তবতা। যেভাবে নাট্য ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ড. কুন্তল বড়ুয়া পরিচালিত নাটক ‘খেলাঘর’ এর কেন্দ্রীয় চরিত্র সীমার ক্ষেত্রে ঘটেছে। তার নিজের সাজানো সংসার ছেড়ে প্রতিকূলতার মুখোমুখি দাঁড়ায় স্বেচ্ছায়, সচেতনভাবে। পেছনে তার নিজ হাতে বন্ধ করা নিজের ঘরের দরজা আর সামনে অচেনা অবাধ পৃথিবী।
সংসারে নারী কারো মা, স্ত্রী বা কন্যা ছাড়াও তার আরেকটি পরিচয় হলো আত্মপরিচয়। সন্তান, স্বামী ও সংসার ছেড়ে কী করে নিজের আত্মোপলব্ধির জন্য একজন নারী গৃহত্যাগী হতে পারে সেটাই এই সমাজের কাছে বিস্ময়কর বিষয়। নারী-পুরুষের সম্পর্কের গ্রন্থিমোচন এবং আত্ম-আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে একজন নারীর যে আত্মোপলব্ধি আর মানবিক আত্মপ্রতিষ্ঠা ঘটে, সেটাই এই নাটকের মূল প্রতিপাদ্য। পুরুষতন্ত্রের জাল ছিন্ন করে কীভাবে একজন নারী মানবিক হয়ে ওঠে। নরওয়ের নাট্যকার হেনরিক ইবসেনের নাটক ‘এ ডল’স হাউস’ অবলম্বনে কথাসুন্দর নাট্যদলের প্রযোজনা ‘খেলাঘর’ নাটকটির ষষ্ঠ মঞ্চায়ন ছিল গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে।
কথাসুন্দরের প্রযোজনা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ ও চট্টগ্রামের নাট্যপ্রেমী অনেক দর্শক নাটকটি উপভোগ করেছেন। শো শেষে কয়েকজন দর্শকের সাথে কথা হয়। জিনাত আরা আলম মন্তব্য করেন, এই ধরনের পরিশীলিত, অভিনয় সমৃদ্ধ নাটক মঞ্চস্থ হলে চট্টগ্রামে নাটকের দর্শকের অভাব হবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী সুমন নাথ বলেন, চট্টগ্রামের গ্রুপ থিয়েটারের সব নাটক আমি দেখি। কুন্তল বড়ুয়ার নাটক মানে হলো বাস্তব জীবন থেকে উঠে আসা নারীর কাহিনী। এর আগেও তার ‘বৃত্তের বাইরে’, ‘ইচ্ছামৃত্যু’ দেখেছি। সেখানেও নারীর প্রসঙ্গ বারবার উঠে এসেছে। এই নাটকে নারীকে তিনি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা যেন সমকালেরই প্রতিচ্ছবি।
দর্শক বর্ণালী চৌধুরী বলেন, আমরা প্রায় শুনি চট্টগ্রামে নাটকের দর্শক নেই। এই ধরনের অভিনয় সমৃদ্ধ নাটক মঞ্চস্থ হলে চট্টগ্রামে দর্শক সমাগম বাড়বে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইভ্যালির ভবিষ্যৎ কী
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬