সা গ রে র ম রু দ্যা ন

সনেট দেব

| বুধবার , ২৪ আগস্ট, ২০২২ at ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও বিলাসবহুল জাহাজের নাম “ওয়েসিস অফ দ্য সিস”। যার বাংলায় অর্থ করলে দাঁড়ায় “সাগরের মরুদ্যান”। নির্মাণ শুরুর আগে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ‘নেম দ্যাট শিপ’ নামের এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্নস্থান থেকে প্রায় ৯১ হাজার নাম সংগৃহীত হয়। বিপুল সংখ্যক নাম থেকে বেছে অবশেষে মিশিগানের জর্জ ওয়েজারের পাঠানো ‘ওয়েসিস অব দ্যা সিজ’ নির্বাচন করা হয়।
২২ তলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল এই জাহাজটিতে রয়েছে ১৬টি ডেক এবং ২,৭০০ টি বিলাসবহুল রুম। জাহাজটি একসাথে ৬,৩০০ যাত্রী ধারণ করতে পারে। সেই সাথে জাহাজটিতে অবস্থান করে ২,১০০ ক্রু। মোট ৭টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে জাহাজের বিশেষত্বকে। যেমন – সেন্ট্রাল পার্ক, পুল, ফিটনেস সেন্টার, বিনোদন কেন্দ্র প্রভৃতি। বিশ্বের প্রথম ভাসমান উদ্যানটি এই জাহাজেই অবস্থিত। যেখানে ১২ হাজার গাছের চারা এবং ৫৬টি গাছ রয়েছে। জাহাজের পেছনের অংশে রয়েছে ৭৫০টি আসন বিশিষ্ট থিয়েটার, যার মধ্যে রয়েছে সুইমিং পুল। জাহাজটির নির্মাণকালীন সময় ছিলো সাড়ে তিন বছর, যা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিলো ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। নির্মাণ কাজ শুরুর হয় ২০০৭ সালের ১২ নভেম্বরে এবং নির্মাণ কাজ শেষের হয় ২০০৯ সালের ১ নভেম্বর মাসে।
ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট সহ ৩ জন ডাক্তার আছে, ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে এক জন মানুষের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। এমনকি হার্ট এটাক হলেও তার চিকিৎসার যাবতীয় আয়োজন আছে। প্রতি যাত্রায় অন্তত একটি এ ধরনের প্রয়োজন দেখা দেয়। তবে ক্ষেত্র বিশেষে জাহাজের ডাক্তার এবং ক্যাপটেন পরামর্শ করে জাহাজের দিক পরিবর্তন করে নিকটস্থ বন্দরে ভেড়াবার ক্ষমতা দেয়া আছে, মাঝে মাঝে রোগীকে হেলিকপ্টারে করে স্থানান্তর করার ব্যবস্থাও আছে। জাহাজে যে ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয় তার মধ্যে খাদ্য সংক্রান্ত পেটের অসুখ, পিঠে ব্যাথা, গলায় ইনফ্যাকশন, সাইনুসাইটিসের চিকিৎসাই বেশি। প্রতি যাত্রায় ২০০০-৩০০০ ওষুধ ব্যবহার হয় যা কেবল মাত্র সী সিকনেসের যেমন জাহাজের রোলিং পিচিং এর কারণে বমি রোধকের জন্য তৈরি।
৮৭০০ মানুষের খাবার ব্যবস্থার জন্য ২৬টা গ্যালি বা রান্না ঘরে যাত্রীদের সকালে ঘুম ভাঙ্গার আগে থেকেই রান্নার কাজ চলতে থাকে। এই সব মালামাল শহরের বন্দর থেকে প্রতি শনিবার প্রায় সকাল ৬টা থেকে জাহাজে ডেকে এসে পৌঁছতে থাকে এবং সকাল সাড়ে সাতটা থেকে সেগুলি চাহিদার তালিকার সাথে মিলিয়ে বাছাই করে ভাঙ্গা প্যাকেট, পচা ইত্যাদি সরিয়ে ফেলে ফর্ক লিফটে করে ভান্ডারে নির্দিষ্ট জায়গা অনুযায়ী স্টোরিং হতে থাকে। যেমন- চা, কফি, দুধ, মাছ, মাংস, চাউল, ময়দা, বিস্কুট, সবজী, সস, কেচাপ, মাখন, পনীর, রুটি এবং পানীয় ইত্যাদি যেটা যেখানে রাখতে হয় সেখানে রাখা হয়। বিভিন্ন গ্যালিতে বিভিন্ন রকমের খাবার রান্না হয়, যেমন যে গ্যালিতে মাছ মাংশ রান্না হয় সেখানে সবজী রান্না বা বেকিং হবে না আবার সকালের নাস্তা বা হালকা নাস্তার জন্য ভিন্ন গ্যালি এই ভাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৈকতের বঙ্গবন্ধু
পরবর্তী নিবন্ধহোল্ডিং ট্যাক্স আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামছে সুরক্ষা পরিষদ