সাড়ে ৬শ কোটি টাকায় হচ্ছে ইন্টারসেকশন

একনেকে অনুমোদন ।। টানেল, এক্সপ্রেসওয়ে ও আউটার রিং রোডের যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এই প্রকল্প

হাসান আকবর | বুধবার , ৭ জুন, ২০২৩ at ৫:২১ পূর্বাহ্ণ

নগরীর পতেঙ্গায় বঙ্গবন্ধু টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং আউটার রিং রোডের যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সাড়ে ৬শ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বমানের ইন্টারসেকশন নির্মাণ করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রকল্পটি গতকাল একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। পুলিশ, সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন, বন্দর, রেলওয়ে, গণপূর্ত এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা দফায় দফায় বৈঠক করে উক্ত ইন্টারসেকশনের ডিজাইন চূড়ান্ত করেছেন। অত্যাধুনিক ডিজাইনের ইন্টারসেকশনটিতে পতেঙ্গায় দুটি ওভারপাস এবং দুটি আন্ডারকাট নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উক্ত জংশনের কোনো রাস্তার গাড়ি ক্রস করবে না। প্রত্যেকটি রাস্তায় নির্বিঘ্নে এবং বিনা সিগন্যালে সরাসরি গাড়ি চলবে। একই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম ইপিজেডকেও আউটার রিং রোডের সাথে যুক্ত করা হচ্ছে। এতে ইপিজেডের দৈনিক প্রায় ১২ হাজার গাড়ি শহরে প্রবেশ না করে আউটার রিং রোড ধরে চলাচল করবে।

সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্পায়ন, বঙ্গবন্ধু টানেল, বে টার্মিনালের কর্মযজ্ঞ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পর্যটনসহ বিভিন্নমুখী গাড়ির চাপ তৈরি হবে পতেঙ্গা এলাকায়। টানেল পুরোদমে চালু হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের একাধিক ইপিজেডের পণ্যবাহীসহ বিভিন্ন গাড়ি আউটার রিং রোড ধরে চলাচল করবে। অপরদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে শহরের গাড়ি মাত্র বিশ মিনিটে পতেঙ্গা পৌঁছবে। পতেঙ্গার সাগরপাড়ে প্রতিদিন জড়ো হওয়া শত শত গাড়ির সাথে বে টার্মিনালের গাড়ি মিলে ভয়াবহ জটলা সৃষ্টি করবে। যা টানেল, আউটার রিং রোড কিংবা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যান চলাচল ব্যাহত করবে। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন এসব প্রকল্পের সুফল থেকেও দেশ বঞ্চিত হবে।

এ অবস্থায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো মাথায় রেখে ইন্টারসেকশন নির্মাণের প্রস্তাব করে। মন্ত্রণালয় থেকে নগর পুলিশ কমিশনারকে প্রধান করে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেয়। উক্ত কমিটি বিভিন্ন বিষয়ে সরজমিনে পরিদর্শন করে পতেঙ্গায় ইন্টারসেকশনের ডিজাইন করে। এতে দুটি ছোট ফ্লাইওভার এবং দুটি আন্ডারকাট (রাস্তার নিচ দিয়ে গাড়ি চলাচলের রাস্তা) নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির ফলে টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, আউটার রিং রোড কিংবা পতেঙ্গা এলাকায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের গাড়িগুলো একটি অপরটিকে ক্রস করতে হবে না। সবগুলো রাস্তার গাড়ি কোনো মোড় বা সিগন্যালে না থেমে সরাসরি চলাচল করবে। কোনো ক্রসিং না করে ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক নিশ্চিত করা হবে।

অপরদিকে চট্টগ্রাম ইপিজেডে পণ্য এবং কাঁচামাল নিয়ে ঢাকাসহ সন্নিহিত অঞ্চলের প্রায় ১২ হাজার গাড়ি প্রতিদিন চলাচল করে। বর্তমানে এসব গাড়ি ইপিজেড থেকে বিমানবন্দর সড়ক ধরে শহরের উপর দিয়ে চলাচল করে। এসব গাড়ি যাতে শহরে প্রবেশ না করে সেজন্য ইপিজেডকে আউটার রিং রোডের সাথে যুক্ত করে দেয়া হচ্ছে। দুটি দুই লেনের ভায়াডাকট (ছোট ফ্লাইওভারের মতো) নির্মাণ করে ইপিজেডকে যুক্ত করা হবে। দুই লেনের একটি ভায়াডাকট দিয়ে গাড়ি ইপিজেডে প্রবেশ করবে। অপরটি দিয়ে বের হয়ে রিং রোডে উঠবে।

সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস বলেন, পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ১৫.২ কিলোমিটারের চার লেনের আউটার রিং রোড, টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শতভাগ সুফল পেতে অত্যাধুনিক এই ইন্টারসেকশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গতকাল একনেকে ৬শ ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এই ইন্টারসেকশন বহুমুখী সুফল পেতে সহায়তা করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ
পরবর্তী নিবন্ধকামড়ে দিল কিশোরকে, বাড়িতে ঢুকে খেয়ে নিল ভাত-তরকারিও