সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি

ইসকনের সম্প্রীতি মহাসমাবেশ

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

সারাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের মঠ মন্দির, দেবালয়, প্রতিমা ভাঙচুর, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ইসকন নোয়াখালী মন্দিরে সাধু-সন্ন্যাসীদের হত্যাসহ দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির উত্তরণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনরুদ্ধার সমাবেশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর নন্দনকানন চত্বরে এ মহাসমাবেশের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্‌কন), চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটি। বেলা ১২টা থেকে মহাসমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে দলে দলে সনাতনীরা সমাবেশে আসতে শুরু করেন। তাদের হাতে ছিল প্লেকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার, জাতীয় পতাকা, গৈরিক পতাকা। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে নন্দনকানন, ডিসি হিল প্রাঙ্গণ, বৌদ্ধবিহার সড়ক, তুলসীধাম সড়ক সহ আশপাশের সড়কগুলো।
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসকনের সাধারণ সম্পাদক শ্রীপাদ চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী। দুপুর ১২ টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। এরপর বৈদিক স্বস্তিবাচনের পরপরই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইস্‌কন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী এবং দিক নির্দেশনামূলক ও দাবি সম্বলিত বক্তব্য রাখেন ইসকন চট্টগ্রামের বিভাগীয় সম্পাদক শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। মহাসমাবেশে মহাআর্শিবাদক ছিলেন শংকর মঠ ও মিশনের আচার্য তপনানন্দ গিরি মহারাজ, তুলসীধামের মোহন্ত মহারাজ দেবদ্বীপ মিত্রপুরী মহারাজ, চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ ড. জিন বোধি ভিক্ষু, পাথরঘাটা ক্যাথলিক চার্চের ফাদার মিস্টার লেনার্ড। ইসকন সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী ও বিপ্লব পার্থের সঞ্চালনায় মহাসমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এড. রানা দাশগুপ্ত, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, বিএনপির মহানগর সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, জাসদের ইন্দু নন্দন দত্ত, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পালিত, ইসকন কো রিজিওনাল সেক্রেটারি শ্রীপাদ রাধা গোবিন্দ দাস ব্রহ্মচারী, গীতা শিক্ষা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা এড. তপন কান্তি দাশ, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, পুলক খাস্তগীর, শৈবাল দাশ সুমন, নীলু নাগ, রুমকি সেনগুপ্তা, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন তালুকদার, সুজিত কুমার বিশ্বাস, প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, লায়ন আশীষ ভট্টাচার্য, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, শ্রীপাদ পন্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী, শ্রীপাদ সুদর্শন জগন্নাথ দাস ব্রহ্মচারী, মিলন শর্মা, দেবাশীষ আর্চায্য, কাঞ্চন আর্চায্য, রুবেল কান্তি দে, সুমন চৌধুরী, অশোক চক্রবর্তী, অ্যাডভোকেট স্বরূপ পাল, অ্যাডভোকেট রাজীব দাশ বাবু, পিয়াল শর্মা, অজয় দত্ত, জুয়েল আইচ অর্ক প্রমুখ। ড. অনুপম সেন বলেন, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ৭২’র সংবিধান ফিরিয়ে আনতে হবে। সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। আর সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে। সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িত, হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করলে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ হবে।
অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমরা সরকারি দলের মধ্যে একটা আত্মশুদ্ধি চাই। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ ক্রমশ ১৯৪৮ সালের আওয়ামী মুসলিম লীগের দিকে চলে যাচ্ছে। ওই আওয়ামী মুসলিম লীগ দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কোন রাজনীতিবিদদের ওপর আমাদের আস্থা নাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমা ও শিশু হাসপাতাল ক্যাম্পাসেই ভোট গ্রহণ
পরবর্তী নিবন্ধভিডিও ছড়ানোর হুমকি দিয়ে ধর্ষণ দুই বন্ধু গ্রেপ্তার