সরগরম হচ্ছে রাজনীতির মাঠ

আওয়ামী লীগ-বিএনপি সকলেই তৃণমূলমুখী

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

করোনা মহামারীর নিষ্প্রাণতা কাটিয়ে রাজনীতিতে ফিরছে প্রাণ। বিশেষ করে গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ডিসেম্বরের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা সম্মেলনের পাশাপাশি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির দিকনির্দেশনা দেয়ার পরপরই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নড়াচড়া শুরু হয়েছে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দল মাঠ পর্যায়ে-তৃণমূলে তাদের কর্মসূচি শুরু করেছে। এদিকে গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রী আবারও নেতাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি সারাদেশ সফরের জন্য দলের পক্ষ থেকে যে ৮টা টিম করা হয়েছে, সেই টিমগুলোকে দ্রুত সময়ের ভেতরে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার পর দেশের প্রতিটি জেলায় আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভা ও কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শুরু হয়েছে। ফলে তৃণমূলে চাঙ্গা ভাব ফিরে এসেছে।
বিএনপির মাসব্যাপী কর্মী সমাবেশ ঃ এদিকে দীর্ঘদিন পর বিএনপির রাজনৈতিক শিবিরে প্রাণচাঞ্চল্য ভাব ফিরে এসেছে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নগরীর ১৫ থানায় মাসব্যাপী কর্মী সমাবেশের আয়োজন করেছে। ১৫ থানার প্রতিটিতে আহবায়ক কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে প্রতিটি থানায় পৃথক কর্মী সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। থানায়-থানায় এ কর্মসূচি আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে বলে নগর বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে তৃণমূল পর্যায় থেকে সংগঠিত করতে বিএনপি চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রতিটি থানার বিদ্যমান কমিটি বিলুপ্ত করে আহবায়ক কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছে। একদিন অন্তর অন্তর নগরীর ১৫ থানায় এখন কর্মী সমাবেশ করছে নগর বিএনপি। এর মধ্যদিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠছে বলে জানান নগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
গত ৯ সেপ্টেম্বর গণভবনে আওয়ামীলীগের সভায় প্র্রধানমন্ত্রী সারাদেশে আওয়ামীলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাগুলোতে বর্ধিত সভা ও প্রতিনিধি সভা করার নির্দেশ দেন। একই সাথে ইউনিট, ওয়ার্ড, থানা ও উপজেলা সম্মেলন শেষে ডিসেম্বরের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা সম্মেলনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন নির্দেশনার পর দেশের রাজনীতি বিশ্লেষকদের অনেকেই আগাম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামীলীগ প্রস্তুতি শুরু করেছেন বলেও মন্তব্য করছেন। একইসাথে ৯ সেপ্টেম্বরের সভায় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেহার আপডেট করতে উপ-কমিটিগুলোকে নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার পর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগ গত ১৯ সেপ্টেম্বর বর্ধিত সভা করেছে। একই দিনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা করেছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের ১৯ সেপ্টেম্বরের বর্ধিত সভায় নগরীর ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং ১৫ থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সকল কর্মকর্তা ও সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় তৃণমূল নেতৃবৃন্দ দলের সম্মেলন এবং আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন।
সভায় আগামী ১২ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামীলীগ। যখন যে ওয়ার্ডে ইউনিট সম্মেলন শেষ হবে- সেই ওয়ার্ডে-ওয়ার্ড সম্মেলনও হয়ে যাবে। ওয়ার্ড সম্মেলন শেষে থানা সম্মেলনও হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত থাকবে।
২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে করোনা মহামারীর কারণে দেশের মানুষের জীবন-যাত্রার গতি অনেকটা থেমে যায়। কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠতেই আবার করোনার সংক্রমণ বেড়ে যায়। দেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির মতো স্থবিরতা নেমে আসে রাজনৈতিক অঙ্গনেও। চলতি বছরের ১৫ আগস্টের পর থেকে এ স্থবিরতা কাটতে শুরু করে দেশের অন্যান্য সেক্টরের মতো রাজনৈতিক অঙ্গনেও।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাউন্সিলরের স্বাক্ষর জাল করে জাতীয়তা সনদ প্রদান
পরবর্তী নিবন্ধক্ষতি সবচেয়ে কম করেও ভুগছি সবচেয়ে বেশি