সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমাদের দেশে অসংখ্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মানবিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে যারা পুরো বছরজুড়েই নিজেদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করছে। অনেকেই নিজের চারপাশে থাকা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের যতটুকু সম্ভব মানবিক সহায়তা দিয়ে পাশে থাকেন। কিন্তু দুর্গমতার কারণে অপেক্ষাকৃত বেশি পিছিয়ে থাকা মানুষগুলোর পাশে নানান কারণেই থাকা সম্ভব হয় না। বর্তমান সরকার দুর্গমতা ঘুচিয়ে এসব জনগোষ্ঠীর পাশে থেকেছে সবসময়। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ তাদের উন্নয়নে সরকার নানা সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। সরকারের পাশাপাশি পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুক্ষায় এবার যুক্ত হলো এসএসসি–২০০২ ও এইচএসসি–২০০৪ ব্যাচ। নগর ছেড়ে পাহাড়ের মাঝে বেড়ে ওঠা এই ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ আরো ব্যাপকহারে বৃদ্ধি করা হবে বলে আমার বিশ্বাস। এজন্য তাদের যে ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হবে তা আমাদের পক্ষ থেকে করা হবে।
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এসএসসি–২০০২ ও এইচএসসি–২০০৪ ব্যাচের উদ্যোগে স্বাস্যসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর শিল্পীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী হোজাগিরি নৃত্য পরিবেশন করেন। মীরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের দুর্গম নলখো ত্রিপুরা গ্রামের হাজারো মানুষ এদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা স্বাস্থ্যসেবা পান।
ক্যাম্পে দেয়া সেবাগুলোর মধ্যে ছিল চোখের চিকিৎসা, মেডিসিন, শিশু ও হৃদরোগ সংক্রান্ত চিকিৎসাসেবা। ২৩টি বুথের মাধ্যমে ৩০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই সেবা প্রদান করেন। পাশাপাশি ৪০ জন শিশুর সুন্নতে খতনাও করা হয় এই ক্যাম্পের মাধ্যমে। শুধুমাত্র চিকিৎসা সেবা নয়, এখানে যারাই এসেছেন তাদের জন্য রাখা ছিল কাপড়, শাক–সবজি। অনুষ্ঠানের সভাপতি মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিতদের জন্য আমাদের ব্যাচ প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প করে। এই ক্যাম্পে এক হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসা নিয়েছেন। ৮০০ মানুষকে দেওয়া হয়েছে কাঁচাবাজার ও পোশাক। আর ৪০ শিশুকে করা হয়েছে খতনা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান, উপ–পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, মীরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ও করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন।