সরকারের বেঁধে দেয়া দরে মিলছে না চিনি

খুচরায় ১২০ টাকা নির্ধারণ হলেও পাইকারিতেই বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা

জাহেদুল কবির | বুধবার , ১৯ জুলাই, ২০২৩ at ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

এখনো অস্থির চিনির বাজার। ব্যবসায়ীরা সরকারের বেঁধে দেয়া মূল্যে চিনি বিক্রি করছেন না। গত দুই সপ্তাহ ধরে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে চিনির দাম উঠানামা করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চিনির সরবরাহ সবসময় একরকম থাকছে না। অন্যদিকে ভোক্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে প্রায় ব্যবসায়ীরা ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে থাকেন। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির বাজার নিম্নমুখী। অথচ আমাদের দেশের বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই।

গতকাল মঙ্গলবার খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারিতে প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬৭০ টাকা। এছাড়া কাজীর দেউড়ির খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সরকার খোলা বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ১২০ টাকা। বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি কেজি চিনি কেনাবেচা চলছে ১২৫ টাকারও বেশি দামে। তাই চাইলেও একজন খুচরা ব্যবসায়ী সরকার নির্ধারিত ১২০ টাকা দামে চিনি বিক্রি করতে পারবেন না। সরকারকে চিনির মিল মালিকদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। কারণ পাইকারি বাজারে চিনি আসে মিল থেকে। মিল থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জানা গেছে, খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে।

দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্য ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে চিনির বাজার উঠানামা করছে। বাজারে চিনির সরবরাহ মোটামুটি রয়েছে। তবে সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, চিনির বাজার নিয়ে আসলে নতুন করে কিছু বলার নাই। আমাদের দেশে হাতেগোনা কয়েকটি গ্রুপ চিনির পরিশোধন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত। সরকার চাইলে এসব কোম্পানিকে নজরদারির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সেসবের কিছুই হচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করার সুযোগ পাচ্ছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
পরবর্তী নিবন্ধপ্রয়োজনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনা মোতায়েন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী