সম্প্রীতির বন্ধন অটুট থাকুক

লালন কান্তি দাশ | রবিবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২১ at ৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ

প্রত্যেক ধর্মের মূল মর্মবাণী হল-শান্তি ও মানুষের কল্যাণ। ধর্ম মানুষকে সম্প্রীতি ও পরমত সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়। ধর্মের সঠিক জ্ঞান অর্জন ও অনুশীলন মানুষের মনে সুন্দর অনুভূতির জন্ম দেয়। বিপরীতে ধর্মীয় জ্ঞানের অভাব মানুষকে ভুল বার্তা দেয়। এ পরিস্থিতিতে ধর্মের ভুল ব্যখ্যা বা সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নিজেদের ফায়দা লুটে নেয়। যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পাশাপাশি রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে। সবাই এদেশের নাগরিক। নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার সবার আছে। অন্য ধর্মের উপাসনালয় ভাংচুর, হত্যা, নির্যাতন কোনো সভ্য সমাজে কল্পনা করা যায় না। দুঃখজনক হলেও সত্যি প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশয় ও মদদে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দিন দিন বলীয়ান হচ্ছে যা চূড়ান্ত বিচারে কারো জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। তাছাড়া অপরাজনীতি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ ধরনের কাজকে উৎসাহিত করছে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়ানো আমাদের সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। কেউ ধর্মের অবমাননা করে থাকলে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুসারে তার বিচার হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া সমীচীন নয়। তাছাড়া একক মানুষের ধর্ম অবমাননার দায় ঐ সম্প্রদায়ের সকলের উপর বর্তায় না। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উপড়ে ফেলতে রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে সবার আগে। দেশেকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিতে হলে এর কোন বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষকে ও সচেতন হতে হবে। অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে। কোন প্রকার গুজব বা উস্কানিতে পা দিয়ে কারো হীন স্বার্থ বা উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার হওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে সবার আগে মানুষ। অশুভ শক্তির বিনাশ হোক, শুভ শক্তির উদয় হোক- এটাই সকলের প্রত্যাশা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইচ্ছাকৃত অস্ত্রোপচার জীবন ঝুঁকি বাড়ায়
পরবর্তী নিবন্ধআত্মোপলব্ধি