সদ্য ঘোষিত রেমিট্যান্স প্রণোদনা ও সূক্ষ্ম চিন্তা

কামরুল হাসান জনি | বুধবার , ৫ জানুয়ারি, ২০২২ at ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

করোনার কারণে রেমিট্যান্স উঠানামা হলেও ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে এই খাত। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে কর্মস্থলে ফেরায় বাড়ছে প্রবাসী আয়। সেই তুলনায় প্রত্যাশিত রেমিট্যান্স যোগ হচ্ছে না। অথচ প্রায় সকল প্রবাসীই মাস শেষে দেশে টাকা পাঠান, পাঠাচ্ছেন। এরমধ্যে রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকারের সদ্য ঘোষিত ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণে উৎসাহিত করবে। কিন্তু এর পেছনের বাস্তবতা যাচাই করাও প্রয়োজন। ইতিপূর্বেও প্রণোদনা থেকে বেশি সুযোগ গ্রহণ করেছে বড় অংকের রেমিট্যান্স প্রেরণকারীরা। আর ‘অবৈধ’ পন্থায় রেমিট্যান্স প্রেরণে ঝুঁকেছেন সাধারণ আয়ের প্রবাসীরা।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রবাসীদের প্রেরিত বৈদেশিক মুদ্রার বৃহত্তর অংশ আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কুয়েত ও কাতার থেকে। এসব দেশের সাধারণ প্রবাসীদের ‘টার্গেট’ করেই চলছে লাঘামহীন হুন্ডি ব্যবসা। ‘মোবাইল ব্যাংকিং’ বা সরকারি অনুমোদন বিহীন ‘বিকাশ’ এর নামে এটি নিয়ন্ত্রণ করছে হুন্ডি ব্যবসায়িরা। একারণে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ সরকারি খাতায় রেমিট্যান্স হিসেবে যোগ না হবার অভিযোগ অর্থনীতি বিশ্লেষকদের। তবে সদ্য ঘোষিত ২.৫ শতাংশ প্রণোদনার চেয়েও বহির্বিশ্ব থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর ‘ফি’ মওকুফ করা গেলে রেমিট্যান্স কয়েকগুণ বাড়তে পারে। তাই, রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে সরকারকে আরও ভাবতে হবে। মূল জায়গাগুলোতে বেশি ফোকাস করতে হবে। লাঘাম টেনে ধরতে হবে হুন্ডির। দূতাবাসগুলো চাইলে সচেতনতার পাশাপাশি জড়িতদের শাস্তির আওতায়ও আনতে পারেন। অন্যদিকে সরকারের উচ্চ মহলের সঙ্গে ‘ফি’ মওকুফের বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে আলাপ করা প্রয়োজন। কারণ রেমিট্যান্স বাড়াতে প্রণোদনার চেয়েও ফি মওকুফ করা বেশি জরুরি। সহজ কথা, প্রবাসী আয়ের সঙ্গে প্রবাসীদের চাহিদা বুঝতে হবে। অন্যথায়, সদ্য ঘোষিত প্রণোদনায় লাভবান হবেন রুই-কাতলারা। সাধারণ প্রবাসীরা নিয়ম করেই ‘অবৈধ’ পথে লেনদেনে অভ্যস্ত হবেন।
-লেখক : গণমাধ্যম কর্মী

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচি হোক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবান্ধব
পরবর্তী নিবন্ধঅতঃপর