সঠিক সময়ে কিডনি রোগ শনাক্ত করা জরুরি

কিডনি দিবসের সেমিনারে বক্তারা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১২ মার্চ, ২০২৪ at ১১:১০ পূর্বাহ্ণ

সঠিক সময়ে কিডনি রোগ শনাক্ত না হলে কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই সঠিক সময়ে কিডনি রোগ শনাক্ত করা জরুরি। অন্যথায় কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন হতে পারে। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে চমেক হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. নুরুল হুদা বলেন, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপকে বর্তমানে কিডনি রোগের প্রধান ঝুঁকির কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হার্ট ও মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে ব্যাঘাত, হঠাৎ কিডনি অকেজো হওয়া, স্থূলতা এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগের কারণেও কিডনি রোগ হয়।

এছাড়া ধূমপায়ী এবং ষাটোর্ধ্ব বয়সীদের কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তিনি বলেন, কিডনি রোগের ক্ষেত্রে কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে। চিকিৎসকরা সাধারণত প্রথমেই রোগ নির্ণয় করার জন্য রোগীর রক্তের ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন এবং ইলেকট্রোলাইটসহ অন্যান্য পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। রোগীর রক্তচাপ কম থাকলে সেটা স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা করাও জরুরি। সঠিক সময়ে রোগ শনাক্ত না হওয়ার কারণে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (সিকেডি) আরও খারাপের দিকে অগ্রসর হয়ে কিডনি ফেইলিউরের ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং স্টেজিং এর দিক থেকে এটি শেষ পর্যায়ের কিডনি রেনাল ডিজিজ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এক্ষেত্রে ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।

সেমিনারে কিডনি বিষয়ক বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধের তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, প্রায় ১০৩০ শতাংশ বা আরো বেশি নেফ্রাইটিসের কারণে, ২০৩০ শতাংশ ডায়াবেটিসের কারণে এবং ১০২০ শতাংশ কিডনি বিকল হয় উচ্চ রক্তচাপের কারণে। এছাড়া বংশগত কারণে, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাল সংক্রমণে, কিডনিতে পাথর হলে, অস্বাস্থ্যকর ডায়েটে এবং ওষুধের প্রভাবেও কিডনিজনিত রোগ হতে পারে। ৮০ ভাগ লোকের কিডনি নষ্ট হওয়ার পিছনে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও নেফ্রাইটিস (কিডনির বিভিন্ন সমস্যা)- এই তিনটি কারণ রয়েছে। সবার পক্ষে কিডনি রোগের চিকিৎসা ব্যয়ের যোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে সচেতন থাকলে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নেফ্রোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রোজান্না বিনতে কামাল।

বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো নুরুল হুদার সভাপতিত্বে সেমিনারে অতিথি ছিলেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার ও চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চমেক হাসপাতাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুস সাত্তার, চট্টগ্রাম মা ও শিশু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ কাসেম, চমেক হাসপাতাল নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ও চমেক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. রবিউল করিম। পরে দিবসটি উপলক্ষে র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি চমেকের শাহআলম বীর উত্তম মিলনায়তন থেকে শুরু হয়ে চমেক হাসপাতালের মূল ফটকে এসে শেষ হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৩৫ টাকায় চাল ও ১০০ টাকায় চিনি বিক্রি করবে চিটাগাং চেম্বার
পরবর্তী নিবন্ধশিশুদের হাত দিয়েই সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গড়ে উঠবে