শেষ দিনের টিকেট কিনতে চাপ

পূর্বাঞ্চলে অবিক্রিত ৫ হাজার ১শ টিকেট যারা পাননি তারা যাত্রার আগে কাউন্টার থেকে কিনতে পারবেন

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১২ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

ঈদের আগের দিন তথা ২১ এপ্রিলের ট্রেনের টিকেট বিক্রির মধ্য দিয়ে ঈদযাত্রার ৫ দিনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি গতকাল শেষ হয়েছে। টিকেট কিনতে সার্ভারে গত চার দিনের চেয়ে গতকাল শেষ দিনে সর্বোচ্চ চাপ ছিল। প্রথমবারের মতো এবার রেল কর্তৃপক্ষ সারা দেশে ঈদের শতভাগ অগ্রিম টিকেট অনলাইনে বিক্রি করেছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, নতুন এই পদ্ধতি যাত্রীদের হয়রানি কমানোর জন্য। তবে কোনো দিন সার্ভারে স্বাচ্ছন্দ্যে প্রবেশ করে টিকেট কাটতে পেরেছে, কোনোদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করেও সার্ভারে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। তাই সার্ভারের জটিলতা কীভাবে কমানো যায় তা নিয়ে আগামীতে রেল কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত। এদিকে ১৯, ২০ ও ২১ এপ্রিল তিন দিনে পূর্বাঞ্চলে ৫ হাজার ১শ টিকেট অবিক্রিত রয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গতকাল শেষ দিনে বিভিন্ন রুটের ট্রেনে প্রায় ২৪শ টিকেট রয়ে গেছে। তবে পশ্চিমাঞ্চলের টিকেটের চাহিদা বেশি থাকায় গতকাল টিকেট বিক্রি শুরু হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে সব টিকেট শেষ হয়ে গেছে। মফিজুর রহমান নামে একজন বলেন, সব অঞ্চলের টিকেট একসঙ্গে না ছেড়ে সময় ভাগ করে ছাড়লে সার্ভারের লোড কমানো সম্ভব হতো।

সার্ভারের দায়িত্বরত কর্মকর্তা এবং রেল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রামে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৮ হাজার টিকেটের জন্য যখন অনলাইনে একসঙ্গে লাখ লাখ হিট পড়ে তখন সার্ভারে সমস্যা দেখা দেয়। তারপরও গত সোমবার ও রোববার সার্ভার জটিলতা ছাড়াই টিকেট কিনতে পেরেছেন যাত্রীরা। শনিবারের সমস্যা গত দুদিনে কাটিয়ে উঠতে পারলেও গতকাল শেষ দিন কিছুটা সমস্যা হয়েছে। সক্ষমতার চেয়ে শত গুণেরও বেশি হিট পড়ছে অনলাইনে। কারও ভাগ্যে টিকেট জুটছে, কারও নয়। তবে আমরা শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে টিকেট বিক্রি করছি।

রেল সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে টিকেট কাটার জন্য নিবন্ধন করেছে ১৮ লাখ মানুষ। ঈদের ফিরতি টিকেট বিক্রি শুরু হবে ১৫ এপ্রিল।

সার্ভারের তথ্য অনুযায়ী, ঈদযাত্রায় অগ্রিম টিকেট বিক্রির শেষ দিনে গতকাল সুবর্ণ এঙপ্রেসে টিকেট বিক্রি হয়েছে ৪২ শতাংশ, পাহাড়িকা এঙপ্রেসে ৯৫ শতাংশ, চট্টলা এঙপ্রেসে ৯৬ শতাংশ, বিজয় এঙপ্রেসে ৮৪ শতাংশ, মহানগর এঙপ্রেসে ৯৩ শতাংশ, মহানগর গোধুলী ৬৯ শতাংশ, সোনার বাংলা এঙপ্রেসে ২২ শতাংশ, মেঘনা এঙপ্রেসে ৯৩ শতাংশ, উদয়নে ৮৯ শতাংশ, তুর্ণা নিশীথায় ৩০ শতাংশ, চাঁদপুর স্পেশালএ ৬৬ শতাংশ, চাঁদপুর স্পেশালএ ৪১ শতাংশ, ময়মনসিংহ স্পেশালএ ৮৯ শতাংশ টিকেট বিক্রি হয়েছে। মোট ৭১ দশমিক ১৮ শতাংশ টিকেট বিক্রি হয়েছে। সাড়ে ৮ হাজার টিকেটের মধ্যে ৬ হাজার ১২৬ টিকেট বিক্রি হয়েছে গতকাল শেষ দিনে। আরো ২৪শ টিকেট রয়ে গেছে।

একই অবস্থা ১৯ ও ২০ এপ্রিলও। ২০ এপ্রিল সুবর্ণ এঙপ্রেসে ৫৮ শতাংশ, পাহাড়িকা এঙপ্রেসে ৯২ শতাংশ, চট্টলা এঙপ্রেসে ৯০ শতাংশ, বিজয় এঙপ্রেসে ৯২ শতাংশ, মহানগর এঙপ্রেসে ৯২ শতাংশ, মহানগর গোধুলী ৮৭ শতাংশ, সোনার বাংলা এঙপ্রেসে ৯৩ শতাংশ, মেঘনা এঙপ্রেসে ৯৫ শতাংশ, উদয়নে ৯৩ শতাংশ, তুর্ণা নিশীথায় ৯০ শতাংশ, চাঁদপুর স্পেশালএ ৪৯ শতাংশ, চাঁদপুর স্পেশালএ ৮৯ শতাংশ ও ময়মনসিংহ স্পেশালে ৮৫ শতাংশ বিক্রি হয়েছে।

১৯ এপ্রিল সুবর্ণ এঙপ্রেসে ৯১ শতাংশ, পাহাড়িকা এঙপ্রেসে ৯৪ শতাংশ, চট্টলা এঙপ্রেসে ৮৮ শতাংশ, বিজয় এঙপ্রেসে ৯৪ শতাংশ, মহানগর এঙপ্রেসে ৯৪ শতাংশ, মহানগর গোধুলী ৮৪ শতাংশ, সোনার বাংলা এঙপ্রেসে ৮৯ শতাংশ, মেঘনা এঙপ্রেসে ৮৪ শতাংশ, উদয়নে ৮২ শতাংশ, তুর্ণা নিশীথায় ৮৮ শতাংশ, চাঁদপুর স্পেশালএ ৩৩ শতাংশ, চাঁদপুর স্পেশালএ ৩১ শতাংশ, ময়মনসিংহ স্পেশালে ৮২ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়েছে।

আসনবিহীন টিকেট বিক্রি হবে : যারা টিকেট পাচ্ছেন না তাদের জন্য আসনবিহীন টিকেট বিক্রি হবে। ঢাকাচট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর সুবর্ণ এঙপ্রেস ছাড়া বাকি ৩৬টি আন্তঃনগর ট্রেনে শুধু যাত্রার দিন আসনবিহীন ২৫ শতাংশ টিকেট বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা। এছাড়া অবিক্রিত টিকেটও যাত্রার আগে কাউন্টার থেকে কাটতে পারবেন যাত্রীরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপহেলা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রা করবে চট্টগ্রাম চারুশিল্পী সম্মিলন
পরবর্তী নিবন্ধডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ইন্তেকাল