শুল্ক ফাঁকির বিদেশি সিগারেটে সয়লাব বাজার

আমদানি করা সিগারেট সরাসরি চলে যায় রেয়াজুদ্দিন বাজারে

জাহেদুল কবির | শনিবার , ১০ জুন, ২০২৩ at ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ

অলিগলির পান সিগারেটের দোকানে হাত বাড়ালেই মিলছে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসা বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের বিদেশি সিগারেট। এসব সিগারেট বিমান বন্দর কিংবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় নিয়ে আসে এক শ্রেণীর অসাধু আমদানিকারক। এরপর আমদানিকৃত সিগারেট সরাসরি চলে যায় নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজারে। সেখান থেকে খুচরা বিক্রেতারা সংগ্রহ করে বিক্রি করেন। এসব সিগারেট এক প্রকার প্রকাশ্যে বিক্রি হলেও প্রশাসন নির্বিকার ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। অভিযান না থাকায় অসাধু আমদানিকারক চক্র শুল্ক ফাঁকি দিয়ে সিগারেট আনতে উৎসাহী হচ্ছে। ফলে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, অনেক অসাধু আমদানিকারক কাস্টমস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বিদেশি সিগারেটের চালান খালাস করে নিয়ে যায়। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যে পরিমাণ সিগারেটের চালান জব্দ করে তা অত্যন্ত নগণ্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী, আমদানিযোগ্য সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে বাংলায় সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ স্পষ্টভাবে লিখা থাকতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ডিপ্লোম্যাটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউস কর্তৃক সিগারেট আমদানির ক্ষেত্রে সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ বাংলায় ছাড়া অন্য যেকোনো ভাষায় লিখা থাকতে হবে। তবে বন্ডেড ওয়্যার হাউসের আমদানি করা সিগারেট খোলা বাজারে বিক্রির সুযোগ নেই। তাই খোলা বাজারের বাংলা সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ লেখা ছাড়া সিগারেট অবৈধভাবে আনা হচ্ছে এটি সহজেই বলা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেয়াজুদ্দিন বাজারের বিভিন্ন দোকানে ডানহিল, বেনসন এন্ড হেজেজ, ৫৫৫, মোর, ইজিলাইট, ইজি স্পেশাল গোল্ড, মার্লবোরো, ওরিস, ব্ল্যাক, মন্ড, ৩০৩ সহ নানা ব্র্যান্ডের সিগারেট অনেকটা প্রকাশ্য বিক্রি হচ্ছে। এসব সিগারেট প্রবাসী ও অসাধু আমদানিকারকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন রেয়াজুদ্দিন বাজারের চোরাই সিগারেটকেন্দ্রিক সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেটের হাত ঘুরে বিভিন্ন মোড় এবং পাড়া মহল্লার পান সিগারেটের দোকানে চলে যাচ্ছে সিগারেটগুলো।

জানতে চাইলে রিয়াজুদ্দিন বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, রেয়াজুদ্দিন বাজারে শুধুমাত্র সিগারেট না অনেক পণ্যই চোরাই পথে আসছে। আসলে রেয়াজুদ্দিন বাজারে একটি অসাধু সিন্ডিকেট কাজ করছে। এসব সিন্ডিকেটের কাজই হচ্ছে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়া। এখন প্রশাসন যদি এসব বন্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে, আমি সাথে থেকে প্রশাসনকে সহায়তা করবো।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফাইজুর রহমান বলেন, মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি হলে আমরা এখন দ্বিগুণ জরিমানা করছি। এ ব্যাপারে কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার কর্মকর্তারা সচেষ্ট রয়েছে। আমরা বিভিন্ন বিমান বন্দর কিংবা চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দিয়ে আসা সিগারেটের চালান আটক করছি। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসা সিগারেট বাইরে বিক্রি হলে সেটি প্রশাসনের দেখা উচিত।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ বলেন, আমরা কাস্টমসের বিষয়টি দেখি। খোলা বাজারে শুল্ক ফাঁকির সিগারেট বিক্রি হলে সেটি পুলিশর‌্যাব দেখতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে অটোরিকশা পুড়িয়ে দিল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা