‘শাসন ক্ষমতা শেখ মুজিবের হাতে দেয়া উচিত’

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ২১ মার্চ, ২০২৩ at ৪:৪২ পূর্বাহ্ণ

১৯৭১ সালের এই দিনে সারা দেশে চলছিল অহিংস অসহযোগ আন্দোলন। মুক্তিপাগল হাজার হাজার মানুষের দৃপ্ত পদচারণায় রাজধানী ঢাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সর্বস্তরের মানুষের সম্মিলিত মিছিল ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান তুলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অভিমুখে এগিয়ে চলে। সেখানে মুক্তি অর্জনের শপথ নিয়ে মিছিল যায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে। তাদের বজ্রকণ্ঠে ধ্বনিত হতে থাকেবীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। বাংলাদেশ স্বাধীন করো। একাত্তরের এদিনে সকালে জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্ট ভবনে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে পঞ্চম দফা বৈঠকে মিলিত হওয়ার আগে তার বাসভবনে আইনজীবী এ কে ব্রোহির সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় মিলিত হন।

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পঞ্চম দফা বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ। বিকালে চট্টগ্রামে ন্যাপ প্রধান মওলানা ভাসানী পলোগ্রাউন্ডে বিশাল জনসভায় বলেন, আলোচনায় ফল হবে না। এ দেশের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থেকে চাপরাশি পর্যন্ত যখন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে মানে না, তখন শাসন ক্ষমতা শেখ মুজিবের হাতে দেয়া উচিত। পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো বিকালে সদলবলে করাচি থেকে ঢাকায় আসেন। এ উপলক্ষে তেজগাঁও বিমানবন্দরে সেনা মোতায়েন করা হয়। সাংবাদিকদের বিমানবন্দরে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়। ভুট্টোকে বিমানবন্দর থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নেয়ার সময় রাস্তার দু’পাশে পথচারীরা ভুট্টোবিরোধী স্লোগান দেয়। সন্ধ্যায় ভুট্টো কড়া সেনা পাহারায় প্রেসিডেন্ট ভবনে যান। সেখানে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে হোটেলে ফিরেই ভুট্টো তার উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এর আগে হোটেল লাউঞ্জে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের ভুট্টো বলেন, এ মুহূর্তে আমি এটুকু বলতে পারি যে, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। ভুট্টো সাংবাদিকদের আর কোনো সময় না দিয়ে সরাসরি লিফটে চড়েন। সাংবাদিকরা লিফটে উঠতে চাইলে ভুট্টোর ব্যক্তিগত প্রহরীরা অস্ত্র উঁচিয়ে বাধা দেয়। এদিকে ষড়যন্ত্র ও ইয়াহিয়ার কৌশল কাজে লাগছে না বুঝতে পেরে জুলফিকার আলী ভুট্টো তার সামরিক উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে। ভেতরে ভেতরে আক্রমণের প্রস্তুতি শুরু করে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। এর অংশ হিসেবে প্রতিদিনই পাকিস্তান থেকে সৈন্যরসদ আসতে থাকে ঢাকায়। তবে দিন যতই গড়াচ্ছিল মুক্তিকামী বাঙালিদের ঐক্য ততই সুদৃঢ় হচ্ছিল। বঙ্গবন্ধুর ডাকে ও নির্দেশনায় চলছিল সবকিছু।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবি ছাত্রলীগ সভাপতির পা টিপার ছবি নিয়ে তোলপাড়
পরবর্তী নিবন্ধদুই ট্রাকের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৬