শক্তিশালী বিরোধী দল পাচ্ছি না : প্রধানমন্ত্রী

শুধু ঋণ নয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগও দেখে-শুনে নেয়

| মঙ্গলবার , ১২ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ

দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল না পাওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করলেন টানা তিন বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, শক্তিশালী বিরোধী দল আমরা পাচ্ছি না। অপজিশন বলতে যারা আছে, তার মধ্যে দুটোই হচ্ছে মিলিটারি ডিকটেটর, একেবারে সংবিধান লঙ্ঘন করে, আর্মি রুলস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, তাদের হাতে গড়া। কাজেই তাদের ঠিক ওই মাটি ও মানুষের সাথে যে সম্পর্ক, সেই সম্পর্কটা তাদের মাঝে নেই। তাদের কাছে ক্ষমতাটা ছিল একটা ভোগের জায়গা। সেই ক্ষেত্রে আসলে অপজিশন তাহলে কোথায়? এখানে একটা পলিটিক্যাল সমস্যা কিন্তু আছে। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময়কালে এই কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাচ্ছে, এ ধরনের রটনাকারীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু ঋণ নয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগও খুব হিসেবে করে দেখে-শুনে নেয়। আগে দেশ ও জনগণের কল্যাণ হবে কিনা, তা নিশ্চিত হয়ে নেয়। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড থেকে যখন শোনায় যে এখানে ডেমোক্রেসি, পার্টিসিপেটরি ডেমোক্রেসি, ইলেকশন, হেনতেন, কিন্তু আসলে এখানে করবেটা কী, সেটাও তারা চিন্তা করে না। গণতন্ত্রের কথা বলতে গেলে অনেক দল দরকার। উন্নত বিশ্বে দেখলে আপনারা দেখবেন, সেখানে কিন্তু মাত্র দুই দল হয়ে গেছে এখন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুই দলের বেশি শক্তিশালী দল নাই। পশ্চিমা দেশগুলোতে নির্বাচন নিয়ে মানুষের অনীহা দেখছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো জানি, আমেরিকার প্রায় ২৫ শতাংশ সংগঠন ইলেকশনই করে না। ইলেকশন করার বিষয়ে একটা অনীহা চলে আসে মানুষের। এটাও কিন্তু অনেক দেশে দেখা যাচ্ছে। আমাদের দেশটা ধীরে ধীরে ওরকম হয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে যে বিএনপিকে দেখা হয়, তাদের শাসনকালও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। পেছনে থেকে তাদেরকে উৎসাহ দিয়ে একবার ক্ষমতায় আনতে পারে, যেটা ২০০১ সালে এনেছিল। কিন্তু তার পরিণতি কী ছিল? বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, বাংলা ভাই সৃষ্টি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, ৫০০ জায়গায় একদিনে বোমা হামলা, আমাদের উপর গ্রেনেড হামলা, অপজিশনের অনেক নেতা-কর্মীদের উপর হামলা।
বিপরীতে আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের দল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ একটা দল, যে দলটা সেই ১৯৪৯ সালে তৈরি। বিরোধী দল থেকে একেবারে সাধারণ মানুষকে নিয়ে এই দলটা গড়ে তোলা। এই সংগঠনের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে এদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারে আসলে এদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়। কেন হয়? এই জন্য হয়, আমরা তো মাটি ও মানুষের মধ্য থেকে উঠে আসা, মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই এই সংগঠনটা তৈরি। কাজেই আমাদের চিন্তা চেতনাটা ওখানেই থাকে। রাজনৈতিক চিন্তাভাবনাটা যদি মানুষকে ঘিরে হয়, মানুষের কল্যাণমুখী হয়, সেই রাজনীতি কিন্তু টিকে থাকে, সেটাই চলে, বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান, রাষ্ট্রদূত-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমম্বয়ক জুয়েনা আজিজ এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআদালতে ঢুকে গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধফেসবুকে মুখোমুখি ছাত্রলীগ-ছাত্রদল