রাঙ্গুনিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহত ইউপি সদস্য প্রার্থীর বড় ভাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আহত হওয়ার এগারদিন পর গতকাল শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহতের নাম ইউসুফ আলী (৪৫)। তিনি উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বগাবিলি গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য ও রাজানগর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবু তৈয়বের বড় ভাই। তার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন। বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। বিক্ষুব্ধ জনসাধারণ ইউসুফ আলীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বগাবিলি ওয়ার্ডে আবু তৈয়বের কাছে হেরে যাওয়া ইউপি সদস্য প্রার্থী আজগর আলীর নেতৃত্বে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগে তার নেতৃত্বে আরও দুই দফায় ইউপি সদস্য আবু তৈয়বসহ তার কয়েকজন সমর্থকের উপর হামলা হয়েছে বলে জানা যায়।
সর্বশেষ গত ২ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার রাণীরহাট বাজার থেকে বগাবিলি এলাকার নিজ ঘরে ফেরার পথে বগাবিলি ব্রীজের কাছে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন ইউসুফ। সন্ত্রাসীরা তার হাত, পা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে জখম করে। আহত ইউসুফকে ওইদিনই চট্টগ্রাম মেডিকেলে ও পরে আরও তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হলেও অবশেষে তার মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবারে স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
এই ঘটনায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রবাসী ইউসুফের স্ত্রী শাহিনুর আকতার বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মো. মাহবুব মিল্কী জানান, মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপ নেবে। মামলায় মো. মামুন (৩২) ও আবু বক্কর (৪৮) নামে দুজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে মহসিন নামে একজন জামিনে রয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
হামলার বিষয়ে ইউপি সদস্য আবু তৈয়ব বলেন, গেল নির্বাচনে আমার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যায় স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী আজগর। নির্বাচনের পর থেকে আজগরের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল প্রবাসী শফিউল, সিএনজি চালক হৃদয় এবং তাদের পর আমার উপরও হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। এবার আমার ভাইটিকে তারা হত্যা করলো। এদিকে ইউসুফ আলীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
