রমজানে বাজার মনিটরিং জোরদার হবে

আমদানি কম হওয়ায় দাম ঊর্ধ্বমুখী, দাবি ব্যবসায়ীদের

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:০০ পূর্বাহ্ণ

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম পড়তির দিকে থাকলেও দেশের বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় এ বছর ভোগ্যপণ্যের আমদানি কম হওয়ায় প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। আগামী মাসের শেষ সপ্তাহে শুরু হচ্ছে রমজান। প্রতি বছর রমজানের আগে ভোক্তাদের মধ্যে ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ে নানা ধরনের আশঙ্কা তৈরি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হলো, বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে কিনা। বিশেষ করে প্রতি বছর রমজানের ঠিক আগ মূহূর্তে বিভিন্ন অজুহাতে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দাম বৃদ্ধির অভিযোগ ওঠে। এবারও একই আশঙ্কা রয়েছে ভোক্তাদের। তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। তাহলে ব্যবসায়ীরা আর অতিরিক্ত মুনাফা করতে পারবেন না।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিমণ (৩৭.৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯৩০ টাকা, অস্ট্রেলিয়ার ছোলা ৮৩ টাকা ও তানজানিয়ার ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৩১৩২ টাকা। দেশি পেঁয়াজ ২২২৭ টাকা, চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০১৮৫ টাকা। মিয়ানমারের আদা ৫৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৮৮ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মটর ডাল ৬১ টাকা, এলাচ প্রতিকেজি ১ হাজার ৩৪০ টাকা, জিরা কেজি ৫৯৫ টাকা, দারচিনি কেজি ৩১০ টাকা, লবঙ্গ কেজি ১ হাজার ৩৪৫ টাকা এবং গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫৯০ টাকায়। অপরদিকে পাইকারিতে পাম তেল মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫৯০ টাকা এবং সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৪৫০ টাকায়। চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, বাজারে রমজানকে কেন্দ্র করে পণ্যের মজুদ শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এবার এলসি কম হওয়ায় পণ্যের আমদানি কিছুটা কমেছে। তাই কিছু কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে বিভিন্ন শিল্পগ্রুপ রমজানের অত্যাবশীয় পণ্যগুলোর পর্যাপ্ত এলসি খুলেছেন। সেই পণ্য আসা শুরু হলে দাম উল্টো কমবে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, রমজান উপলক্ষে ভোগ্যপণ্যের কোনো ঘাটতি হবে না বলে আমদানিকারক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সবসময় বলা হয়। তবে পণ্যের সরবরাহে যদি কৃত্রিম সংকট না হয় এবং সরকার যদি আমদানিকারক থেকে শুরু করে খুচরা বাজার পর্যন্ত তদারকি জোরদার করে তাহলে রমজানের সময় দাম বাড়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না। ব্যবসায়ীরা প্রায় সময় চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতার অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে থাকেন। সামনে রমজানে প্রশাসনকে অবশ্যই কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক আজাদীকে বলেন, রমজানের ভোগ্যপণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের জন্য আমাদের বিশেষ টিম থাকে। রমজানের আগে আমরা ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করি। ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া পুরো রমজান মাসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। কেউ যদি অনিয়ম করেন তাদের আমরা জেল জরিমানা করি। এছাড়া বর্তমানেও আমাদের বাজার মনিটরিং চলমান রয়েছে। রমজানের সময় সেটি আরো জোরদার করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনরমাল ডেলিভারি করাতে চিকিৎসকদের টিম ওয়ার্ক
পরবর্তী নিবন্ধডালডা, পাম অয়েল ও কাপড়ের রং ব্যবহার করে ঘি তৈরি