যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক শহরে ট্রাম্প সমর্থকদের সশস্ত্র মহড়া

বাইডেনের অভিষেক সামনে রেখে উত্তেজনা

| মঙ্গলবার , ১৯ জানুয়ারি, ২০২১ at ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেক সামনে রেখে দেশটির রাজ্যপরিষদগুলোর কাছে বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভ হয়েছে, ছোট ছোট দলে জড়ো হওয়া প্রতিবাদকারীদের কিছু অংশ সশস্ত্র ছিল। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটলে সৃষ্ট দাঙ্গায় পাঁচ জন নিহত হওয়ার পর রোববার রাজ্যপরিষদগুলো ঘিরে সশস্ত্র প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর সমর্থকরা, এ নিয়ে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এদিন টেক্সাস, ওরেগন, মিশিগান, ওহাইও ও অন্যান্য স্থানে রাজ্য ক্যাপিটল ভবন বা আইনপরিষদগুলোর সামনে প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আইনপরিষদগুলো ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করায় অন্য অনেক রাজ্যের পরিস্থিতি শান্ত ছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।
আগামী বুধবার বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের আগে রোববার দেশজুড়ে সশস্ত্র প্রতিবাদ হতে পারে বলে এফবিআই সতর্ক করেছিল। সহিংস প্রতিবাদের আশঙ্কায় বহু নগর কর্তৃপক্ষ ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল, সড়কগুলোতে অবরোধ বসিয়ে হাজার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন করেছিল। খবর বিডিনিউজের।
অনলাইনে ট্রাম্পপন্থি ও কট্টর ডানপন্থি নেটওয়ার্কগুলোর করা পোস্টে ১৭ জানুয়ারি সশস্ত্র বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু এসব কর্মসূচির ডাক পুলিশের ফাঁদ হতে পারে এবং কঠোর নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী অনুসারীদের এগুলোতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলে। শেষ পর্যন্ত অল্প সংখ্যক প্রতিবাদকারী যাদের সংখ্যা কয়েক ডজন হবে কয়েকটি শহরে জড়ো হয়, ফলে বহু রাজ্যপরিষদের চারপাশের সড়কগুলোর অধিকাংশই ফাঁকা ছিল।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওহাইওর কলম্বাস শহরে রাজ্যপরিষদের সামনে ব্যাপক অস্ত্র সজ্জিত বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বুগালু বোয়িস মুভমেন্টের প্রায় ২৫ জন সদস্য ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে উৎখাত করতে চাওয়া শিথিলভাবে সংগঠিত এই গোষ্ঠীটির সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করা ‘বন্দুক রাখার অধিকার’ বিষয়ক সমাবেশে যোগ দিতে এখানে এসেছেন। এদিকে মিশিগানে প্রায় দুই ডজন লোক, যাদের কয়েকজন রাইফেল বহন করছিলেন, লান্সিংয়ে রাজ্যপরিষদের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে; এ সময় পুলিশ তাদের ওপর সতর্ক নজর রেখেছে। এখানে এক প্রতিবাদকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমি এখানে সহিংসতা করতে আসিনি আর কেউ সহিংসতা দেখাবে না বলে আশা করছি।‘ অস্টিনে টেক্সাসের ক্যাপিটল ভবনের সামনেও প্রায় এক ডজনের মতো প্রতিবাদকারী দাঁড়িয়ে ছিল, তাদের কয়েকজনের কাছে রাইফেল ছিল। হারিসবার্গে পেনসিলভেইনিয়ার ক্যাপিটলের সামনে ট্রাম্পের একজন সমর্থক স্বল্প উপস্থিতিতে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এখানে কিছুই হচ্ছে না।’
বাইডেনের আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণের দিনটিতে আরও প্রতিবাদ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিন ট্রাম্পের স্থলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন বাইডেন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের অভিষেক সামনে রেখে ওয়াশিংটন ডিসির অধিকাংশ এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। রাজধানীতে প্রচুর ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সিক্রেট সার্ভিসের অনুরোধে ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মল বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যারিকেড বসিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাইডেনের টিম যু্‌ক্তরাষ্ট্রবাসীকে কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে রাজধানীতে না আসার আহ্বান জানিয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসির মেয়রসহ স্থানীয় কর্মকর্তারা জনগণকে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান দূর থেকে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন। দায়িত্বের প্রথম দিনে বাইডেন যেসব নির্বাহী আদেশ দেবেন, তার একটিতে যুক্তরাষ্ট্রের আবার প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা থাকবে। আরেকটিতে সাত মুসলিম দেশের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে নতুন নির্বাহী আদেশ দেবেন তিনি। এর পাশাপাশি এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ভ্রমণ এবং ফেডারেল সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে মাস্ক বাধ্যতামূলক করবেন বাইডেন। এসব নির্বাহী আদেশ দিতে অভিষেকের দিনই ব্যস্ত সময় কাটবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্যামসাং ‘রাজপুত্রের’ আড়াই বছরের জেল
পরবর্তী নিবন্ধপ্রথম ধাপেই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরা করোনার ভ্যাকসিন পাবেন