যতদিন এই পৃথিবী থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ থাকবে

৩৬ বীর মুক্তিযোদ্ধার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আজাদী সম্পাদক

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:০১ পূর্বাহ্ণ

দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সে বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে হবে। অনেকে বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক, কেউ বলেন, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। আমি বলতে চাই যতদিন এই পৃথিবী থাকবে, ততদিন স্বাধীন বাংলাদেশ থাকবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ থাকবে। স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীন মানুষ হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে পারব-এটাই আমার কাছে সবচেয়ে গৌরবের। জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সে স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়িত করে গেছেন। আজকে আমরা স্বাধীন। আমরা সৌভাগ্যবান, কারণ আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী একই বছরে উদযাপন করতে পারছি।
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে গতকাল শনিবার কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভা, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ, কাট্টলীর ৩৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ কখনো শোধ করতে পারব না। তারা সেদিন যুদ্ধ করেছিলেন দেশমাতৃকার টানে। নিজের কোনো চাওয়া-পাওয়া পূরণ বা ব্যক্তিগত সুবিধা ভোগের জন্য সেদিন কেউ যুদ্ধে যাননি। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধারাই এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান।
এম এ মালেক বলেন, ভাষা আন্দোলনের প্রথম কবিতা কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী রচিত ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ ছাপানো হয়েছিল আমাদের কোহিনূর প্রেস থেকে। আমার বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আবদুল খালেক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ কাজটি করেছিলেন। এজন্য আমি গর্ব অনুভব করি।
তিনি বলেন, জীবনটা একটা নোটবুকের মতো। যার প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠা আগেই লেখা হয়ে গেছে। মাঝের পৃষ্ঠাগুলো ফাঁকা। সেই পৃষ্ঠাগুলো যদি আমরা নিজেদের সফল কর্মতৎপরতার মধ্য দিয়ে ভরিয়ে তুলতে পারি, তবে পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের মনে রাখবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সমাজ তথা এই দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে হবে।
কেএম ফয়েজ আলী কিন্ডারগার্টেন মাঠে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি হাসেম আলী। উদ্বোধক ছিলেন কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাবেক লায়ন গভর্নর লায়ন নজমুল হক চৌধুরী।
প্রধান আলোচক ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা গবেষণা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন উত্তর কাট্টলীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরলগাথা, সম্মুখ ও গেরিলা যুদ্ধের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, তিনি নিজেই এসব যুদ্ধে সাক্ষী ছিলেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে কাট্টলীর নাম ঐতিহাসিকভাবে সাক্ষী দেবে। কাট্টলীতে আমি স্বাধীনতাবিরোধী তেমন কোনো মানুষ পাইনি। ইমতিয়াজ উদ্দীন পাশা, মুছা, বেলা, সলিমউল্লাহ, জসিম, শাহাবুদ্দীন আহমদ চৌধুরীসহ অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্ম কাট্টলীতে। কাট্টলীর ইতিহাস নিয়ে ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে একটা বই লেখা জরুরি। আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছি, যাদের বয়স এখন ষাটের ঊর্ধ্বে অর্থাৎ যুদ্ধকালীন যাদের বয়স ১০ বছরের উপরে তাদের নাম, ঠিকানা সংগ্রহ করে যাচ্ছি। কারণ তারাও নানাভাবে সে সময়ে যুদ্ধে সহায়তা করেছেন।
অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক সাইফুদ্দীন আহমদ সাকীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল কবির চৌধুরী, সমিতির সহসভাপতি আব্বাস রশিদ, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হাসান বাবু, সদস্য সচিব শাহরিয়ার জিয়া, শোয়েব ইসলাম, আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রাক্তন স্কুলছাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ক্রেস্ট, উত্তরীয়, বই প্রদান ও ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত করা হয়। শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে অদিতি সঙ্গীত পরিষদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইস্টার্ন রিফাইনারির উৎপাদন বন্ধের শঙ্কা
পরবর্তী নিবন্ধসাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের ইন্তেকাল