মোদীর আসার বিষয়ে কোনো কর্মসূচি ছিল না

ফেসবুক লাইভে বাবুনগরী ।। গ্রেপ্তার বন্ধের দাবি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হেফাজত নেতারা

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ২০ এপ্রিল, ২০২১ at ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসা উপলক্ষে হেফাজতে ইসলামের কোনো কর্মসূচি ছিল না বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। গতকাল সোমবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লাইভে এসে তিনি এ কথা বলেন। অন্যদিকে ধরপাকড় বন্ধের দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন সংগঠনটির মহাসচিব নুরুল ইসলাম। গতকাল রাত ১০টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের ধানমন্ডির বাসায় দেখা করতে যান হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন মাহফুজুল হক ও আতাউল্লাহ হাফেজ্জীসহ বেশ কয়েকজন।
এদিকে ফেসবুক লাইভে বাবুনগরী বলেন, গত ২৬ মার্চ কিছু দুর্ঘটনা হয়েছে। অথচ সেদিন হেফাজতে ইসলামের কোনো কর্মসূচি ছিল না। আমাদের কোনো কমান্ড ছিল না। আমি নিজে হাটহাজারী মাদরাসায় ছিলাম না। দূরে সফরে ছিলাম। এর আগে, বায়তুল মোকাররমেও কিছু মুসল্লি কেরামের মাজখানে কিছু অঘটন হয়েছে। ক্যাডাররা মুসল্লিদের মারধর করেছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভেতরে। এরপরে হাটহাজারীর ঘটনা ঘটেছে। যার জন্যে আমরা দুঃখিত। আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, কিছু কিছু বক্তা বক্তৃতায় কিছু বললেও হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। এ হলো হেফাজতের অবস্থান। হেফাজত শান্তিশৃঙ্খলা চায়। সংঘাতে যেতে চায় না। কিন্তু কিছু কুচক্রি মহল নানা প্রকার গুজব রটাচ্ছে। সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা এসব গুজবে কান দেবেন না। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী, হক্কানী ওলামায়ে কেরাম, বুজুর্গানে দ্বীন, ছাত্রজনতা, তৌহিদী জনতাকে বেধড়কভাবে হয়রানি গ্রেপ্তার করা হচ্ছে দাবি করে হেফাজতের আমির বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের যেসব ওলামায়ে কেরামসহ নির্দোষ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি দান করুন। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশ্য কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা ক্ষমতা থেকে নামানো নয়। নাউজুবিল্লাহ, এটা ডাহা মিথ্যাচার। জনগণ এবং সরকারকে আমি বলব, আপনারা এসমস্ত গুজবে কান দেবেন না। হেফাজতে ইসলাম ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এখন ২০২১, এই ১১ বছরে কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না অমুক পার্টির সঙ্গে হেফাজতের সম্পর্ক ছিল। আমি হেফাজতে ইসলামের অবস্থান ক্লিয়ার করলাম। এসব কিছুর পরে প্রশাসন মাহে রমজানে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী, হক্কানী ওলামায়ে কেরামদের বুজুর্গানে দ্বীন, দেশের ছাত্রজনতা, তৌহিদী জনতাকে হয়রানি করছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না।
তিনি বলেন, হাটহাজারী মাদরাসার আশেপাশে কেউ ঘরে নাই। তারা এসব আন্দোলনে ছিল না। কিন্তু তারা ঘরে থাকতে পারে না। সব ঘর খালি। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের যেসব ওলামায়ে কেরামসহ নির্দোষ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি দান করুন।
দেশাবাসী, হেফাজতের নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে বাবুনগরী বলেন, আপনারা সবুর করুন, কোনো সংঘাত, ভাঙচুর জ্বালাও পোড়াও করবেন না। হেফাজত জালাও পোড়াওতে বিশ্বাস করে না। বরং হারাম মনে করে। আপনারা সবুর করুন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হেফাজত নেতারা : হেফাজত নেতারা কেন দেখা করেছেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, হেফাজত নেতাদের যাতে গণগ্রেপ্তার না করা হয়। তবে আমি তাদের বলেছি, কোনো গণগ্রেপ্তার হচ্ছে না। যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, ঠিক তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে হেফাজত নেতা মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্যই মহাসচিব মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এবিষয়ে হেফাজত থেকে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। হেফাজত নেতারা আর কোনো বিষয়ে আলোচনা করেছেন কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কামরাঙ্গীরচর হাফেজ্জী হুজুরের ছেলে মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার কথা বলেছেন। এছাড়া আর কোনো আলোচনা হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমামুনুলের ৩ বিয়ে, কাবিন একটির : পুলিশ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আরো ৫ জনের মৃত্যু