মিত্রবাহিনীর বিমান আক্রমণে চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর অচল হয়ে পড়ে

আজাদী ডেস্ক | শনিবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ

যুদ্ধে পরাজয়ের আশংকায় লে. জেনারেল নিয়াজী পালাবার পাঁয়তারা করে। তার এই গোপন অভিসন্ধি বিবিসি ফাঁস করে দেয়। নিয়াজী স্বীয় দুর্বলতা ঢাকার জন্য এদিন ইন্টার-কন্টিনেন্টাল হোটেলে দম্ভভরে বলেন, কোথায় বিদেশি সাংবাদিকরা, আমি তাদের জানাতে চাই, আমি কখনো আমার সেনাবাহিনীকে ছেড়ে যাব না। মিত্রবাহিনীর জঙ্গি বিমানগুলো ঢাকা বেতার কেন্দ্রের উপর আক্রমণ করে এবং কুর্মিটোলার উপর বার বার রকেট হামলা অব্যাহত রেখে নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করে। মিত্রবাহিনীর বিমান আক্রমণে চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর অচল হয়ে কলাম
পড়ে। কয়েকটা জাহাজ ভর্তি পাকবাহিনী বঙ্গোপসাগর দিয়ে পালাবার সময় ধরা পড়ে। একটি জাহাজে নিরপেক্ষ দেশের পতাকা উড়িয়ে পাকবাহিনী সিঙ্গাপুর পালাবার পথে মিত্র নৌবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আগা শাহী উ থান্টের সঙ্গে সাক্ষাত করে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি ব্যক্ত করেন। চীনের অস্থায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রী চিপো ফেই বলেন, ভারতের কার্যকলাপে তার সমপ্রসারণবাদী নগ্নরূপ প্রকাশ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, সমাজতন্ত্রী সাম্রাজ্যবাদীরা নির্লজ্জের মতো ভারতীয় সমপ্রসারণবাদের ত্রাণকর্তার ভূমিকা গ্রহণ করে বর্বরোচিত কাজ করেছে।
সম্মিলিত বাহিনী উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধে সর্বাত্মক সাফল্য অর্জন করেছে। মিত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে দিনাজপুর, রংপুর ও সৈয়দপুরের শত্রুবাহিনীকে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। যৌথবাহিনী এই তিন শহর ছাড়া রংপুর ও দিনাজপুর জেলা সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত করে। রাতে পাকবাহিনী জামালপুর গ্যারিসন ছেড়ে ঢাকার দিকে পালাবার সময় শহরের অদূরে যৌথবাহিনীর মুখোমুখি হয়। এ-যুদ্ধে প্রায় ১৫০০ পাকসেনা হতাহত হয়। বাকিরা আত্মসমর্পণ করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নয়াদিল্লীতে বলেন, যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত জাতিসংঘের আহবান ভারত প্রত্যাখ্যান করেনি বা গ্রহণও করেনি। প্রস্তাবটি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজয় শুধু তখনই সম্ভব হবে যখন বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত এক কোটি শরণার্থী তাদের বাস্তুভিটায় ফিরে যেতে পারবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম থেকে যোগ দিচ্ছেন বিএনপির ১০ হাজার নেতাকর্মী
পরবর্তী নিবন্ধফখরুল-আব্বাস কারাগারে