মধ্যবিত্তের জনজীবন দুঃখ ও হাহাকারে পূর্ণ

মীনহার সুলতানা নিকা | বুধবার , ২৪ আগস্ট, ২০২২ at ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাই জানে বাইরের জগতটাকে কিভাবে মানিয়ে নিতে হয়। জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলো কাটিয়ে উঠার উপায়, মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠা মানুষগুলোই জানে। জীবন নামক নাট্যমঞ্চে মধ্যবিত্তরাই শ্রেষ্ঠ অভিনেতা-অভিনেত্রী। কয়েকদিন ধরে সবকিছুর দাম বেড়েছে। দেশে জ্বালানি তেলের দাম হঠাৎ করেই রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই মূল্যবৃদ্ধির সাথে সাথে বাজারে চড়া দাম আসে সব পণ্যে। স্বস্তি মিলছে না কোথাও। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। বেতন বাড়েনি বেড়েছে শুধু খরচ। সাধ থাকলেও সাধ্য থাকছে না কারোরই। নতুন করে সবজি, মুরগি, ডিম, আটা, ময়দা, চাল, চিনির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েেেছ। উচ্চবিত্তরা মানিয়ে চলতে পারলেও মধ্যবিত্ত – নিম্নবিত্তের আয় না বাড়াতে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
সীমিত আয়, এক রুমে অনেক সদস্যের অবস্থান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পড়ালেখার খরচ এবং প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির মিল না থাকা ইত্যাদি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নিত্যদিনের সঙ্গী। ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিতে আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত সমাজ বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানবিক বিপর্যয় হতে পারে। খাবারের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে মূল্যবৃদ্ধি আর মধ্যবিত্ত হারিয়ে যাচ্ছে বাস্তবতার কাছে। বাস্তবতা অবশ্য এত সরল না। মধ্যবিত্তের লাইফস্টাইল, আচরণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ইত্যাদি সবসময়ই একটু জটিল। মধ্যবিত্ত জীবন মানে সাশ্রয়। মধ্যবিত্ত জীবন মানে মানিয়ে চলা। মধ্যবিত্ত জীবন মানে হাজারো কষ্টে ভালো থাকি বলা। কোনো কিছু নষ্ট না করে শেষ পর্যন্ত তার ব্যবহার আর এই মধ্যবিত্ত জীবনের নৃত্যদিনের অলিখিত নিয়ম। অভাব ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে আজকের জনজীবন দুঃখ ও হাহাকারে পূর্ণ। আমরা মনে করি, সরকার যদি এই বিষয়টিকে হালকা এবং উন্নয়নের সূচক হিসেবে দেখে তবে বিষয়টি দেশকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে। তাতে সরকারের এত বছরের উন্নয়নের ছবি স্থির চিত্র হয়ে ঝুলতে থাকবে মরা সভ্যতার নোনা দেয়ালে। আশা করি, সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করে দেশের সাধারণ মানুষের আরও একটু সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা প্রদানে বরাবরের মতো ভূমিকা রাখবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপদ্মা সেতু
পরবর্তী নিবন্ধট্রেন দুর্ঘটনা ঠেকাতে তদন্ত কমিটির ১১ সুপারিশ